সত্য ধর্ম ইসলাম ও তার অনুসারী মুসলমানদের বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক ও মনস্তাত্ত্বিক আক্রমণ দিনদিন বেড়েই চলেছে। এমতাবস্থায় প্রয়োজন হলো, ইসলামি আকিদা-বিশ্বাস সংরক্ষণের প্রচেষ্টাকে বৃদ্ধি করা। দেখা যাচ্ছে যে, মুসলমানদের বৃহৎ একটি শ্রেণী নিজেদের মুসলমান দাবি করা সত্ত্বেও ইসলামের ওই সকল অকাট্য ও মৌলিক আকিদার ব্যাপারেও সংশয় পোষণ করছে, যেগুলোর ওপর ইসলামের মূলভিত্তি ও বুনিয়াদ। সুতরাং যে-সকল আকিদার ব্যাপারে কিছুটা বিতর্ক ও মতানৈক্য রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে সাধারণ মুসলমানদের অজ্ঞতার কী অবস্থা, তা সহজেই অনুমেয়।
আল্লাহ তায়ালা এই পৃথিবীতে আমাদেরকে যতগুলো নিআমত দিয়েছেন, তার মধ্যে অন্যতম একটি নিআমত হল শিশু। এই শিশুরা হল মানব বাগানের ফুল। আর এই ফুলগুলো রক্ষার দায়িত্ব হল আমাদের অভিভাবকদের। এ সম্পর্কে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
“প্রত্যেকটি শিশুই ফিতরাতের উপর জন্মলাভ করে। তারপর তার পিতামাতা তাকে ইহুদি-খ্রিস্টান ও অগ্নিপূজারি রূপে গড়ে তোলে।”
দুঃখজনক হলেও সত্য যে আমরা আমাদের শিশুদের দুনিয়া সাজাতে যতটা সচেতন ও তৎপর তাদের আখিরাত সাজাতে ঠিক ততটাই গাফেল ও অলস। তাইতো কোমলমতি শিশুদের কচি হৃদয়ে দীন ও ইমানের বীজ বপনের কার্যকরী কোন পদক্ষেপ আমাদের নেই।
প্রিয় পাঠক! গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টিকে সামনে রেখেই আমাদের বক্ষমান পুস্তিকা “ছোটদের ইমান-আকিদা শিক্ষা”।
পুস্তিকাটিতে রয়েছে শিশু-কিশোদের মুখস্ত করার উপযোগী ইমান ও আকিদা সংক্রান্ত মোট ২১৫ টি প্রশ্নোত্তর। যা আপনার শিশুর স্বচ্চ হৃদয়ে গড়ে দেবে ইমান ও আকিদার মজবুত ভীত।
সুতরাং পুস্তিকাটি হতে পারে আপনার ছোট্ট সোনামণির জন্য আপনার পক্ষ থেকে শ্রেষ্ঠ উপহার।
অধমের দৃষ্টিতে এই সমস্যার কার্যকর সমাধান হলো, ইসলামি আকিদার শিক্ষাকে স্বতন্ত্রভাবে প্রাতিষ্ঠানিক সিলেবাসের রূপদান করা। শুরু থেকেই বিষয়টিকে এর চাহিদা অনুপাতে গুরুত্ব প্রদান করা। শুধু সাধারণ সভা-সমাবেশের মাধ্যমে নাস্তিক্যবাদের ধ্বংসাত্মক তুফানকে প্রতিরোধ করা যাবে না। অতীতে ইসলামের বিরুদ্ধে আগত সকল ফিতনাকে তো আমরা স্পষ্টভাবে ফিতনা বলতে পারতাম এবং তার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারতাম; কিন্তু বর্তমানে ফিতনাসমূহ এমন আকর্ষণীয় রূপ ধারণ করে আসছে যে, তাকে ফিতনা বলে আখ্যায়িত করাও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সংক্ষিপ্ত এই পুস্তিকাটি প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা অনুযায়ী রচনা করা হয়েছে, যেন দীনি ও আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষাসিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করে শিশু-কিশোরদের ইমান-আকিদাকে সংরক্ষণ ও সুদৃঢ় করা যায়।