মধ্যবর্তী বিরতি দিয়ে হলেও কথাসাহিত্যিক সিরাজুল ইসলামের সাহিত্যযাত্রার বয়স প্রায় পাঁচ দশক। তিনি জীবনবাদী লেখক, বাস্তবতাকে নিরাসক্তভাবে প্রকাশ করেন। চোস্ত পায়জামা-র গল্পগুলোও তাঁর উপস্থাপনভঙ্গির অনন্য নিদর্শন হিসেবে প্রকাশিত। গ্রন্থভুক্ত দশটি গল্পের চরিত্র বিন্যাসে সিরাজুল ইসলাম মুনশিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। গল্পগুলো গতানুগতিক নয় যে এক বসাতেই পড়ে শেষ করা যায়। বরং গল্পের কাহিনি ও চরিত্র পাঠকের গভীর মনোযোগ দাবি করে।
গল্পে ইতিহাস ও সময়ের বাস্তবতা নির্মাণে লেখক যেন ইতিহাসবিদ কিংবা প্রত্নতত্ত্ববিদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। বিশেষ করে পুরোনো ঢাকার নিজস্ব সংস্কৃতি লেখক নিবিড় মমতা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। মানবসম্পর্কের জটিল ও রহস্যময় অঞ্চল তাঁর গল্পে বিশেষ অনুসন্ধানের বিষয়। কোনো কোনো গল্পে লেখকের নিজস্ব জীবনের ছাপ বিদ্যমান। তাঁর গল্প নিরেট আবেগসর্বস্ব শিল্প নয়। গল্পে মানুষের জীবন ও প্রাত্যহিকতার ভেতর যে বহুমুখী সংকট লীন হয়ে থাকে, তিনি সেসবের প্রতি পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করেন। জীবনবোধে তাড়িত মৌলিক গল্প পাঠে আগ্রহী পাঠকের কাছে চোস্ত পায়জামা আগ্রহের কেন্দ্র হয়ে উঠতে সক্ষম।