ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ ১০০ ফুলের ঢেউ : আবেগ ছড়াবে মনে মনে মালেক মাহমুদ একালের সচল শিশুসাহিত্যিক। তাঁর ছড়া-শিশুপদ্য এবং কিশোর কবিতা পত্র-পত্রিকায় নিরন্তর ছাপা হচ্ছে। বইয়ের সংখ্যাও একেবারে কম নয়। হয়তো কিশোর বয়স থেকেই লিখছেন, তবে এক দশক ধরে আমি তাঁর লেখার সঙ্গে বিশেষভাবে পরিচিত, তাঁর সঙ্গেও।
এ সময়ের হাতেগোনা যে ক’জন ভালো লিখছেন মালেক মাহমুদ তাঁদের অন্যতম। শিশুপদ্য বা কিশোর কবিতার প্রধান উপজীব্য-প্রকৃতি। প্রকৃতি সাজানো ছয় ঋতুর রঙ-সৌন্দর্যে। ছোটদের মনটা ওই ছয় ঋতুর মতো। তারা হাসে মন খুলে। কাঁদে গাল ভাসিয়ে। তাদের অভিমান এবং আনন্দও তাদের মতই। আর তারা অবিরাম স্বপ্ন দেখে। তাদের স্বপ্নগুলো কখনো কখনো পাখি হওয়ার , আকাশ ছোঁয়ার কিংবা বড়োরা যা ভাবতে পারে না সেই ভাবনায়। মালেক মাহমুদ ছোটদের ওই প্রবনতাকে উপলব্ধি করতে পারেন। বলা যায় প্রত্যেক ভালো শিশুতোষ লেখকেরই শিশুর প্রকৃতি-প্রবণতার সঙ্গে পরিচয় থাকতে হয়। অন্যথায় ছোটদের সঙ্গে পরিচয় থাকতে হয়। মালেক মাহমুদ স্বপ্ন ও ভাবনায় আপাদমস্তক শিশুসাহিত্যিক বা ছোটদের কবি। একজন লেখকের লেখালেখির বয়স মোটামুটি ১০ বছর হলে বাজারে তার বই জরুরি, অন্তত সেই দশ বছরে সে যা লিখেছে পাঠকের কাছে মলা্টবন্দি করে পৌঁছে দিয়ে পাটকক তাকে চিনতে পারে সহজে। মালেক মাহমুদ এ যুগের লেখক, তাই সৌভাগ্যক্রমে বইয়ের সংখ্যা একটি নয় ১৪ টি। বলা যায় এও এক বিস্ময়ের ব্যাপার এই ১৪ টি বই শিশুতোষ কবিতা আর ছড়ার। তাই এ চৌদ্দ পদ্য বইয়ের মধ্যে থেকে বেছে বেছে ১০০ টা ছড়া পদ্য নিয়ে একটা নির্বাচিত বই বের হলে তা হবে সোনায় সোহাগা। একালের এক কবির একটি নির্বাচিত সংকলন বের হতে চলেছে নামটিও বেশ চমৎকার, ‘১০০ ফুলের ঢেউ’ । সোনারোদ বিকেলে সাঁঝের ডাকে একটু মায়াবী আবেশ ছড়াতে ছড়াতে যখন ফুলবেন পুবাল হাওয়া বইতে থাকে তখন সাজানো ফুলগুলো ঢেউ ঢেউ দুলনি প্রকৃতিকে নাচিয়ে দেয়। মালেক মাহমুদের ‘১০০ ফুলের ঢেউ’ তেমনি মন ছুঁয়ে ছুঁয়ে আনন্দের সৌরভ ছড়িয়ে দেভে। এই এক ফুল-১০০টা চমৎকার ছান্দিক চমক। এতে আছে ছন্দের মন মাতানো শব্দ, বলা যায় পদ্যের গীতল স্পন্দন, কবিতার আগে মেশানো অন্তমিল আর মাত্রার খেলা। ছড়াগুলো ছড়া নয় তার নতুন বই। এ বইটি ছোটদের সঙ্গে সঙ্গে বড়রাও পাঠে সমান আনন্দ পাবেন বলে আমার নিরঙ্কুশ-বিশ্বাস।
মালেক মাহমুদ ৫ই এপ্রিল ১৯৬৯ সালে মানিকগঞ্জ জেলার হরিারমপুর থানার উত্তর মেরুন্ডী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলা একাডেমীর সদস্য। --ফারুক নওয়াজ
মালেক মাহমুদ
শিশুসাহিত্যে অনন্য নাম মালেক মাহমুদ। তার লেখায় ফুটে ওঠে দেশের কথা, মুক্তিযুদ্ধের কথা, তিনি অতি সহজে শিশু-কিশােরদের মন ভােলাতে পারেন। নাচাতে পারেন, হাসাতে পারেন। শিশুদের নিয়ে যেতে পারেন স্বপ্ন ও কল্পনার জগতে। তার লেখায় ফুটে ওঠে দেশমাতৃকার কথা। মাটি ও মানুষের কথা। তিনি লিখে চলছেন আপন মনে শিশুদের জন্য। জাতীয় পত্র-পত্রিকায় ছােটদের পাতায় নিয়মিত। প্রকাশ হচ্ছে তার গল্প ও ছড়া-কবিতা।
তিনি বােঝেন শিশু-কিশােরদের মনের ভাষা। তাই তাদের উপযােগী করে রচনা। করেন গল্প। নতুন রঙে ফোটে উঠে। ছড়া-কবিতা। এ সময়ের হাতে গােনা যে। কজন ভালাে লিখছেন মালেক মাহমুদ তাদের মধ্যে অন্যতম।
তিনি শিশু কিশােরদের জন্য ছড়া-কবিতার বই লিখেছেন ৩৩টি। গল্পের বই ১৮টি। সম্পাদনা বই ৩টি। সবুজ প্রজাপতি লাল ফড়িং' মালেক মাহমুদের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কিশাের উপযােগী গল্পগ্রন্থ। সমাজ বাস্তবতায় তাঁর এ গল্পগ্রন্থ কালের সাক্ষী হয়ে থাকবে। মালেক মাহমুদের জন্ম-৫ এপ্রিল ১৯৬৯ কন্যা- নাজয়ন্নাহার রত্না। স্ত্রী-নিলুফা ইয়াসমিন। তিনি বাংলা একাডেমির সদস্য। লেখালেখির জন্য পেয়েছেন বিভিন্ন পুরস্কার।