ফেসবুক-টুইটার-অ্যান্ড্রয়েডশাসিত একুশ শতকে অনেক কিছুই আর নেই। নেই সেই চিরচেনা শান্ত দিঘি, তার টলটলে কালো জল। নেই হইহুল্লোড়ে ভরা বিকেলবেলার মাঠ, অজস্র ধুলোখেলা, সরগরম গানের বাড়ি কিংবা কাঠের বাঁকা নৌকা। তালপাতার বাঁশিও তো একপায়ে দাঁড়ানো তালগাছের মতোই কবে অতীত হয়ে গেছে! আমাদের জীবন থেকে চিরদিনের মতো হারিয়ে যাওয়া এইরকম সব ‘ছিল’ নিয়েই সুনির্মল চক্রবর্তীর ছিল একটা।
সুনির্মল চক্রবর্তী
সুনির্মল চক্রবর্তীর জন্ম ২রা অক্টোবর, ১৯৫৩ তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকায়। পিতা শান্তিরঞ্জন চক্রবর্তী, মাতা গীতারানি চক্রবর্তী। শৈশব ও কৈশােরের সােনালি দিনগুলাে কেটেছে শিলিগুড়ির ক্ষুদিরাম পল্লি, কলকাতার সন্তোষপুর, যাদবপুরে। ছাত্রাবস্থায় প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় বিদ্যায়ের বিষাণ পত্রিকায়। গল্প প্রকাশিত হয় ছােটোদের পত্রিকা শিশুমেলায়। শিক্ষা কলকাতায়। বিকম (অনার্স), এমকম, এলএলবি, ডিবিএম, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট। কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন ছিলেন বিহার, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশে। কাজ করেছেন। কোলাে ইন্ডিয়া লিমিটেডের সেন্টাল কোল ফিল্ড এবং নর্দার্ন কোল ফিল্ড লিমিটেডে। প্রধানত, ছােটোদের জন্য ছড়া, কবিতা, গল্প, রূপকথা, উপকথা ও অনুবাদে তার বইয়ের সংখ্যা একশ ছাড়িয়েছে। তার লেখা উল্লেখযােগ্য বইগুলাে হলাে: খাতার পাতায়, গড়গড়িয়ে তরতরিয়ে, কদমঠাপা, হলুদ পাখি, মেয়েটির নাম চন্দনা, উশিমা, তানাবাতা, পাখির বন্ধু ইদুর, বেড়ালের বন্ধু, নবকথামালা, স্বপ্নবিলাসী পাখি, বটকেষ্টবাবুর ছাতা, নতুন গ্রহে যতীনবাবু, এস্কিমােদের রূপকথা, ছিল একটা এবং পদ্যে সহজ পাঠ। তার লেখা ছােটোদের বই অনূদিত হয়েছে হিন্দু ও ইংরেজি ভাষায়। কুসুমপুরের শালিক বইটির জন্য পেয়েছেন। শিশুসাহিত্যের জাতীয় পুরস্কার।