বাদল সেই নিচুজমি বা গর্তের দিকে এগোতে গিয়ে সশব্দে অবাক হওয়ার মতো করে দেখতে পায়, সেই রক্ত এবং কাদামাখা ডেডবডির পাশে হাঁটু গেড়ে বসে আছে তার মা। মা কখন নিঃশব্দে পৌঁছে গেছে লাশের পাশে! বাদলের মতো শাজাহানও একটু থমকায়। তারা দুইজনে এগিয়ে চলে লাশের দিকে। এক, দুই, তিন করে ধাপ গুনতে থাকে বাদল। তার হাঁটুতে জোর নেই। মনে হচ্ছে অনন্ত সময় ধরে সে হাঁটছে লাশের পাশে পৌঁছানোর জন্য। এই পথ শেষ হচ্ছে না কেন? মা কীভাবে এত চটজলদি পৌঁছে গেল সেখানে? তারপরে মনে হয়, মায়েরা মা বলেই এমনটা পারে। কিন্তু সে ভাই হয়ে পারছে না কেন? শাজাহান বোধহয় তার অবস্থা বুঝতে পারে। সে বাদলের হাত চেপে ধরে তাকে এগিয়ে নিতে থাকে।
জাকির তালুকদার
জন্ম ২০ জানয়িারি ১৯৬৫ নাটোরে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে স্নাতক। স্নাতকোত্তর ডিগ্রী স্বাস্থ্য অর্থনীতিতে। সমকালীন মুলধারার বাংলা কথাসাহিত্যে তাঁর অপরিহার্যতা ইতোমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত। অনবরত বাঁকবদল তাঁর সাহিত্যিকতার প্রধান বৈশিষ্ট। বিষয় ও আঙ্গিকে, মাধ্যম ও প্রকরণে তাঁর স্বাতন্ত্র্যচিহ্নিত অবস্থান সকল মহলেই স্বীকৃত। কথাসাহিত্য এবং চিন্তামূলক কর্মকাণ্ডের সকল ক্ষেত্রে বিচরণকারী জাকির তালুকদার ২৫ গ্রন্থের জনক। বাংলাসাহিত্যের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন তাঁর দ্বিতীয় প্রবন্ধগ্রন্থ।