চাঁদের পাহাড় এক বাঙালি অভিযাত্রিকের গল্প। যার রয়েছে এডভেঞ্চার ও অজানাকে জানার দুর্দমনীয় নেশা। শঙ্কর রায় চৌধুরী এই গল্পের নায়ক। গ্র্যাজুয়েশন করার পর পাটকলে চাকরি পেলেও তার মন রোমাঞ্চ খোঁজে। অবশেষে আফ্রিকায় কাজ করা তার গ্রামের এক অধিবাসীর সহায়তায় সে আফ্রিকায় ক্লার্ক হিসেবে কাজ পায় এবং পরে উগান্ডা রেলওয়েতে চাকরি শুরু করে। এখানেই তার দেখা হয় পর্তুগিজ অভিযাত্রিক ও স্বর্ণসন্ধানী ডিয়েগো আলভারেজ-এর সাথে। আলভারেজ তাকে অদ্ভুত এক ঘটনা বলে। সে এবং তার সঙ্গী জিম কার্টার পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হীরক খনির সন্ধান পেয়েছিল। কিন্তু সেই খনি পাহারা দেয় এক ভয়ংকর জন্তু-বুনিপ। বুনিপ জিমকে মেরে ফেলে এবং আলভারেজ কোনোমতে পালিয়ে আসে। শংকর এই গল্প শোনার পর সিদ্ধান্ত নেয়, সে রওনা হবে চাঁদের পাহাড় অভিমুখে। খুঁজে বের করবে হিরার খনি। শংকরের এই রোমাঞ্চকর অভিযান নিয়েই কালজয়ী কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি- চাঁদের পাহাড়।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় (১২ই সেপ্টেম্বর, ১৮৯৪ - ১লা সেপ্টেম্বর,১৯৫০) ছিলেন একজন জনপ্রিয় ভারতীয়বাঙালি কথাসাহিত্যিক। তিনি মূলত উপন্যাস ও ছোটগল্প লিখে খ্যাতি অর্জন করেন। পথের পাঁচালী ও অপরাজিত তাঁর সবচেয়ে বেশি পরিচিত উপন্যাস। অন্যান্য উপন্যাসের মধ্যে আরণ্যক, আদর্শ হিন্দু হোটেল, ইছামতী ও অশনি সংকেত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। উপন্যাসের পাশাপাশি বিভূতিভূষণ প্রায় ২০টি গল্পগ্রন্থ, কয়েকটি কিশোরপাঠ্য উপন্যাস ও কয়েকটি ভ্রমণকাহিনী এবং দিনলিপিও রচনা করেন। বিভূতিভূষণের পথের পাঁচালী উপন্যাস অবলম্বনে সত্যজিৎ রায়পরিচালিত চলচ্চিত্রটি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন। ১৯৫১ সালে ইছামতী উপন্যাসের জন্য বিভূতিভূষণ পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার রবীন্দ্র পুরস্কার (মরণোত্তর) লাভ করেন।