বোতল ভূত
বইয়ের নাম: বোতল ভূত লেখক: হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনী:প্রতীক প্রকাশনা সংস্থা ধরণ: শিশুতোষ উপন্যাস প্রচ্ছদ: ধ্রুব এষ পৃষ্ঠা: ৬৪ বইবাজার মূল্য: ৮০ টাকা হুমায়ূন আহমেদ একজন সার্বজনীন লেখক ছিলেন। তাঁর সহজ সরল ভাষায় তিনি যেমন বড়দের জন্য বই লিখেছেন, ঠিক তেমনি ছোটদের জন্যও লিখেছেন অসাধারণ কিছু বই।'বোতল ভূত' বইটি ঠিক তেমনি একটি শিশুতোষ বই। শিশু ও কিশোরদের জন্য উপযোগী একটি অসাধারণ বই। উত্তম পুরুষে রচিত এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র এক ছোট কিশোর, নাম হুমায়ূন। তার ক্লাসে মুনির নামের ছেলেটা বেশ অদ্ভুত ধরণের।কারো সঙ্গেই কথা বলে না। সে পেছনের বেঞ্চিতে বসে আর ক্লাসের সময় জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকে। স্যার কিছু জিজ্ঞেস করলেই সে এমন ভাব করে তাকিয়ে থাকে দেখে মনে হয় একটা কথাও বুঝতে পারছেনা। এজন্য শিক্ষকদের কাছে তাকে অনেক প্রহার হতে হয়, কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়না।তাই শিক্ষকরা সবাই মোটামুটি হাল ছেড়ে দিয়েছেন। একদিন অঙ্কের শিক্ষক একটা জটিল অঙ্ক করতে দেন ওদের, চৌবাচ্চার অঙ্ক। কেউই অঙ্কটা ঠিকমতো কষতে পারে না। কিন্তু হুমায়ূন অবাক হয়ে দেখে মুনির চট করে অঙ্কটা করে ফেলে। মুনির পাশে বসা হুমায়ূনও তার কাছ থেকে দেখে অঙ্কটা করে ফেলে।তারপর নিয়ম অনুযায়ী ডান হাত উঁচু করে রাখে।কিন্তু কেউ হাত তুলছে না দেখে হুমায়ূন চট করে হাত নামিয়ে ফেলে,কারণ কেউ হাত না তুললে তাকেই অঙ্কটা স্যার বোর্ডে করতে বলবেন। এদিকে স্যার সেটা দেখে হুংকার দেন।অবশেষে মুনির ও হুমায়ূন দুজনের খাতায় অঙ্ক দেখে কে কার থেকে দেখেছে সেটা জিজ্ঞেস করেন। বশির নামের এক দুষ্টু ছেলে সত্যিটা স্যারকে বলে দেয়।মুনির কথা না বলার জন্য ও হুমায়ূন দেখে দেখে লেখার জন্য শাস্তি পায়। এই মুনির হঠাৎ করে হুমায়ূনের কাছে প্রস্তাব রাখে সে বোতল ভূত পুষবে কিনা! হুমায়ূন বোতল ভূত কি সেটা ভেবেই অবাক হয়!কৌতূহলবশতই হুমায়ূন মুনিরের সাথে বোতল ভূত আনতে যাওয়ার জন্য রাজি হয়ে।গাছপালায় ঢাকা শেওলা পড়া দো'তলা বাড়িতে তারা উপস্থিত হয়। বাড়ির নাম শান্তিনিকেতন।দরজায় কড়া নাড়তেই বেরিয়ে আসে সন্ন্যাসীর মতন চেহারার এক লোক।লোকটি দেখতে অবিকল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতন। পরনে আলখাল্লার মত লম্বা পোশাক।লোকটি কবিতাও লেখে,তার লেখা একটা কবিতা তাদের পড়ে শোনায়। হুমায়ূনের কবিতাটা আগে কোথাও শুনেছে বলে মনে হয়, কিন্তু মনে পড়ে না। লোকটি বেশ অদ্ভুত।সেই অদ্ভুত লোকটিই ছোট্ট শিশিতে ভরে দিল ভুতের বাচ্চা।সেই ভুতের বাচ্চাকে সঙ্গে করে হুমায়ুন ঘরে নিয়ে আসার পর থেকেই ভূতের অদ্ভুত সব কর্মকাণ্ড শুরু হয়। কিন্তু সেই কান্ডগুলোই বা কী? জানতে হলে পড়তে হবে 'বোতল ভূত'। ভূতের বাচ্চার সাথে সাথে আশেপাশের মানুষের কাহিনী নিয়ে মজাদার কাহিনী নিয়ে কাহিনী আগাতে থাকে। রেটিং: ৭.৫/১০ #বইবাজার_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_মার্চ_২০১৯
হুমায়ুন ও মুনির দুই বন্ধু। হুমায়ুনের ক্লাস রোল নম্বর হলো ৩২ এবং মজার বেপার হলো ক্লাসে মোট ছাত্রের সংখ্যাও ৩২। হঠাৎ একদিন মুনির, হুমায়ুন কে বললো, "এই হুমায়ুন ভূতের বাচ্চা পুষবি।" হুমায়ুন এর কোনো মানে খুঁজে পেলো না যে, ভূতের বাচ্চা আবার কীভাবে পুষে? তখন মুনির বললো যে, তার এক নানা আছে যে কিনা অবিকল রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো দেখতে এবং তার কাছেই ভূতের বাচ্চা আছে।হুমায়ুন একদমই তার কথা বিশ্বাস করলো না।তবুও সে বললো দেখে আসি সেই ভূতের বাচ্চাকে। তারা সেই লোকটার কাছে গেলো। লোকটা তাদেরকে একটি হোমিওপ্যাথি ঔষধের শিশিতে করে সে ভূতের বাচ্চাটা দিলো।আর বললো "তারা যা চাইবে ভূতের বাচ্চা তাদের তাই দিবে।" সেই ভূতের বাচ্চা সম্পর্কে হুমায়ুনের সারা বাড়ি জেনে যায় এবং ভয় পেয়ে গিয়ে তাকে বলে ভূতটিকে একটি কুয়োর মধ্যে ফেলে দিতে।কিন্তু হুমায়ুন সেটিকে না ফেলে নিজের কাছে রেখে দিলো, কিন্তু সে এখনও বিশ্বাস করেনি যে এতে কোনো ভূত আছে।একদিন সে পরিক্ষা করে দেখল যে, শিশিতে আসলেই কী কোনো ভূত আছে? তাই সে ভূতকে বললো, "ভূত ভাই, আমার স্কুলে কাল থেকে গ্রীষ্মের ছুটি দেওয়ার ব্যবস্থা করে দাও না?" পরের দিন থেকে আসলেই তার স্কুল গ্রীষ্মের ছুটির জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়।তাই হুমায়ুন হতভম্ব হয়ে গিয়ে ছিলো। এরপর থেকে হুমায়ুন ভুতের কাছ থেকে যা যা চেতো, তাই তাই পেতো।তার জীবন অনেক সুখের হয়ে উঠেছিল এবং একটা বছরও কেটে গিয়েছিলো।হঠাৎ একদিন সে আর সেই ভূতের বাচ্চাটিকে খুঁজে পেলো না।তাই সে খুবই কষ্ট পেলো আর বলতে লাগলো, "ভুত ভাই, তুমি যেখানেই যাও না কেনো ভালো থেকো।" কারণ সে বুঝতে পেরেছে যে ভূতের বাচ্চাটি আর তার কাছে আসবে না (কারণটা সে নিজেও জানে না)। হুমায়ুন আহমেদের সকল কিশোরসমগ্র উপন্যাসের মধ্যে এটিও একটি।এই বইটিতে একটি ভূতের বাচ্চা নিয়ে অনেকগুলো মজার কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে (কিন্তু আসলে সে শিশিটাতে কোনো ভূত ছিলোই না)।আশা করি বইটি সকলের ভালো লাগবে। ধন্যবাদ। #বইবাজার_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_মার্চ_২০১৯