‘ব্যোমকেশ সমগ্র’ বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ বাংলা সাহিত্যের এক অতি প্রিয় চরিত্র ব্যোমকেশ বক্সী। ধারালো নাক, লম্বা চেহারা, নাতিস্থূল অবয়ব। অসামান্য পর্যবেক্ষণ-ক্ষমতা, অনবদ্য বিশ্লেষণী দক্ষতা। শুধু বুদ্ধি দিয়েই যাবতীয় জটিল রহস্যের জট ছাড়ান এই সত্যান্বেষী। তবু কী রোমাঞ্চকর একেকটি ব্যোমকেশ-কাহিনী। আসলে ব্যোমকেশের গল্প-উপন্যাস নিছক গোয়েন্দা-কাহিনী নয়। বরং সাহিত্যের ভোজে যা ছিল অপাঙক্তেয়, সেই গোয়েন্দা-কাহিনীকে ব্যোমকেশ-কাহিনীর মধ্য দিয়ে চিরায়ত সাহিত্যের স্তরে উত্তীর্ণ করেছিলেন শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। জীবনকে এড়িয়ে ব্যোমকেশ-কাহিনীর সৃষ্টি করেননি তিনি। চেনা জীবনের মধ্যেই ফুটিয়ে তুলেছেন অচেনা চমক। এহেন ব্যোমকেশ-কাহিনীই এবার এক খণ্ডের দুই মলাটের মধ্যে| ব্যোমকেশের প্রতিটি গল্প-উপন্যাস এই অখণ্ড সংগ্রহে সাজানো হয়েছে কালানুক্রমিক বিন্যাসে। ব্যোমকেশ-জীবনের এক ধারাবাহিক চলচ্ছবি এই গ্রন্থ।
শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৭ চৈত্র, ১৩০৫ বঙ্গাব্দ (৩০ মার্চ, ১৮৯৯) উত্তরপ্রদেশের জৌনপুর শহরে, মাতুলালয়ে। পিতা : তারাভূষণ, মাতা : বিজলী প্রভা। আদি নিবাস উত্তর কলকাতার বানগর কুঠিঘাট অঞ্চলে পড়াশােনা মুঙ্গেরে ও কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজে বি-এ পাশ করে ল কলেজে ভর্তি হন। শেষ পর্যন্ত পাটনা থেকে আইন পাশ করেন। ছাত্রাবস্থাতেই বিবাহ স্ত্রী : পারুল। সাহিত্যরচনার শুরু কবিতা দিয়ে প্রথম কাব্যগ্রন্থ। ‘যৌবনস্মৃতি' (১৩২৫ বঙ্গাব্দ) এরপর দুটি-একটি গল্প । সাহিত্যকে জীবিকা করে তােলা ১৯২৯ সাল থেকে । ১৯৩৮ সাল থেকে বােম্বাইয়ে চলচ্চিত্রে চিত্রনাট্য লেখার কাজে প্রথমে বােম্বে টকিজ, পরে অন্যত্র ও ফ্রিল্যান্স। সিনেমার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে ১৯৫২ সাল থেকে পুণাতেই স্থায়ীভাবে বসবাস। জ্যোতিষচর্চায় আগ্রহ ছিল গভীর। ছদ্মনাম : চন্দ্রহাস। পুরস্কার : রবীন্দ্র পুরস্কার, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরৎস্মৃতি পুরস্কার, মতিলাল পুরস্কার ও অন্যান্য । মৃত্যু : ২২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭০ সাল।