বিশ শতকের বিশ্ব ছড়া’ বইয়ের সূচনায় অনুবাদক বলেছেন- ছড়ার মধ্যে অনেক ধরনের ম্যাজিক আছে। শব্দের খেলায় অভিনব ও ম্যাজিকেল মিল ছড়ার শরীরে খেলে বেড়ায়। কতো নতুন শব্দের খেলা থাকে। শব্দকে ভেঙে চুরে কতো মিল, কতো অনুপ্রাস থাকে। অনুবাদে তা নির্মাণ করা সম্ভব নয়। অন্তর্জগতের ধ্বনি মাধুর্য কি পাওয়া যায়? যায় না। সেই অক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতা নিয়েই আমাদের অনুবাদ সাহিত্য। মূল ছড়ার প্রকৃত স্বাদ হয়তো পাঠকদের সামনে তুলে ধরতে পারিনি। ক্ষমা প্রার্থনাপূর্বক বলতে চাই আমার অক্ষমতায় ছড়াগুলোকে জীবন্ত হয়ে ওঠেনি। কিন্তু ছড়ার বিষয় বৈচিত্র্যকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। বিদেশি ছড়ায় তাদের সমকাল, তাদের জীবন যাপন তাদের পরিবেশ, যন্ত্রসভ্যতা ঋতুবৈচিত্র্য এসবই বিষয় হিসাবে বারবার উঁকি দিয়ে যায়। বিদেশি ছড়ার সাথে সংযোগ তৈরি হলে আমাদের ছড়াও নতুন ধারার হবে। সেই প্রত্যাশা করি।
অনুবাদে কখনোই কবিতার আসল স্বাদ পাওয়া যায় না। ভাষার এই রূপান্তরের সীমাবদ্ধতা মানতেই হবে। তবে কবিতার মূল ভাবকে হয়তো দুর্বলভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব। আমি সেই চেষ্টাই করেছি। আমার এই প্রচেষ্টা সিঁড়ির প্রথম ধাপে পা রাখার মতো। দরোজাটা সামান্য খোলা হলো মাত্র। মুক্ত বায়ু প্রবাহিত হবে, বিশ্বছড়ার সাথে পরিচয় হবে আমাদের। তৈরি হবে যোগসূত্র। হয়তো বাংলা ছড়াও নতুন পথের সন্ধান পাবে।
আমিরুল ইসলাম
জন্ম ৭ এপ্রিল ১৯৬৪, লালবাগ, ঢাকা। পিতা প্রয়াত সাইফুর রহমান। মাতা প্রয়াত আনজিরা খাতুন। পিতৃব্য প্রয়াত কবি হাবীবুর রহমান, খ্যাতনামা শিশুসাহিত্যিক। শিমুসাহিত্যের সকল শাখায় সমান স্বচ্ছন্দ। ২০০৬-এ পেয়েছেন বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার। সবচেয়ে কম বয়সে ‘খামখেয়ালি’ ছড়াগ্রন্থের জন্য পেয়েছেন শিশু একাডেমীর অগ্রণী ব্যাংক শিশু সাহিত্য পুরস্কার। পরে এই পুরস্কার পেয়েছেন আরও পাঁচবার। এছাড়াও পেয়েছেন সিকান্দার আবু জাফর সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৪), নুরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কার (২০০৩), পদক্ষেপ সাহিত্য পুরস্কার (২০০৫), ছোটদের মেলা পুরস্কার (২০০৯)। প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৬০টির অধিক। সবই শিশুসাহিত্য। দেশের খ্যাতিমান সকল প্রকাশনা সংস্থা থেকে এক বা একাধিক বই প্রকাশ ফেয়েছে। দশ বছর সম্পাদক ছিলেস বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত কিশোর-তরুণদের উৎকর্ষধর্মী মাসিক ‘আসন্ন’র। অদুনালুপ্ত দৈনিক বাংলার ছোটদের প্রথম চার রঙের কিশোরদের পাতা সম্পাদনা করেছেন পাঁচ বছর। চ্যানেল আই-তে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অসুষ্ঠান বিভাগে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে কর্মরত। ‘সাপ্তাহিক’-এর প্রকাশকও তিনি। কৌতুকপ্রিয়, আড্ডাবাজ, জীবন-রসিক, ভোজনপ্রিয় আমীরুল ইসলাম পৃথিবীর অধিকাংশ বিখ্যাত শহর ঘুরেছেন। প্রিয় সখ পুরনো বই ও চিত্রকলা সংগ্রহ, বইপড়া, দাবা খেলা, গান শোনা।