এই পুস্তক আমার ভবিষ্যৎ নাতি-নাতনিদের জন্য উৎসর্গীকৃত। তিন দশক ধরে পৃথিবীর পঞ্চাশটিরও বেশি দেশে যেসব হাজার হাজার প্রবন্ধ, গল্প ও আত্মকাহিনী প্রচারিত হয়েছে। সেসব থেকে সংগৃহীত ঘটনার অংশ একত্রিত করে যে ধারণা আমার নাতি-নাতনিরা করবে তাদের নানা ও নানির সম্পর্কে সেকথা ভেবে আমি শিহরিত হচ্ছি। এ ব্রিজিত বার্দো ও রজার ভাদিমের যে সকল কাহিনী প্রকাশিত হয়েছে তার সব কিছু অসত্য ঘটনা নয়, হয়ত কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে অতিরঞ্জিত হতে পারে। আমাদের সমাজ এমনি যে চিত্র শিল্প জগতের কোনাে মুখরােচেক ঘটনা পেলে তাকে এমনভাবে ফাঁপিয়েফুলিয়ে বড়াে করে যে প্রকৃত ঘটনা সেই অতিরঞ্জনের রঙে মিশে যায়, আসল রং চাপা পড়ে। এসব কিন্তু আমার পছন্দ নয় যে আমি এমন কোনাে মুখােশ পরতে চাই না যা আমার চেহারার সাথে মিলে না।
কিন্তু এই পুস্তকের অন্য একটি কারণ আছে, তাহল কিছু বলে আনন্দ-দুঃখ পাওয়া এবং এই নামকরা মহিলার উদ্দাম যৌবন জীবনের কিছু চিত্র তুলে ধরা। তাই আমি সেই অতীত কাহিনীর পর্দা তুলে ধরে প্রকাশ করার অদম্য ইচ্ছা প্রদমিত করতে পারিনি। আমি এই সব অমূল্য সম্পদের ভাণ্ডারকে কুক্ষিগত করে যক্ষের মতাে আগলে রাখতে চাইনি—কারণ আমার মৃত্যুর পর তা বিস্তৃতির অতল গহ্বরে তলিয়ে যেত এবং এই পরিরানীর কাহিনী থেকে অগণিত পাঠক সমাজ বঞ্চিত থাকত।
ব্রিজিত আধুনিক যুগের পরি-কাহিনীর একটি রাজ কন্যা। কিন্তু পরি-কাহিনীর মাঝেও নিষ্ঠুরতা আছে, যদিও ভাগ্যক্রমে তা মিলনান্তকে পরিণত হয়েছে। আমি তাই এই উদ্গত মুকুলিত তরুণী সম্বন্ধে কিছু বলতে চাই তার রাজকন্যা হবার আগ পর্যন্ত।
আমি বার্দোকে খুব ভালােই জানতাম। ভবিষ্যতের এক বিখ্যাত চিত্র তারকার কথা। এর সাথে আমি আমার জীবনকে শেয়ার করেছি—চলচ্চিত্রের পর্দায় দুনিয়াকে তাক লাগাবার পূর্বে। এটা বার্দোর আশ্চর্যজনক রূপান্তর-প্রায়ই বেদনাদায়ক-আবার মনােমুগ্ধকর। সেই কথাগুলােই আমি বলতে যাচ্ছি।