অভিধান ব্যবহারের রেওয়াজ আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় বিশেষ নেই। এই অভ্যাস গড়ে তােলার জন্য প্রথম দিকে হয়ত কিছুটা জোর করে চেষ্টা করতে হবে। একবার অভ্যাস গড়ে উঠলে দেখা যাবে এর মধ্যে একটা মজা আছে, আকর্ষণ আছে। কত বিষয় আমরা অস্পষ্ট জানি, আর সেই অস্পষ্ট ধারণা নিয়েই জীবন কাটিয়ে দিই। অভিধান অনেক সময়ই এই অস্পষ্টতা কিছুটা কাটাতে পারে। অন্ধকার থেকে আলােতে আসার মতাে এর মধ্যে একটা স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দের আস্বাদ পাওয়া যায়। একবার এই আস্বাদ পেলে অভিধানের ব্যবহার সহজ হয়ে যায়। তখন মনে হয় এটা অবশ্য প্রয়ােজনীয় গ্রন্থ। বিজ্ঞান অভিধানটি বাংলায় লেখা হলেও মূল শব্দগুলি (head words) ইংরেজিতে দেওয়া হয়েছে। ইংরেজি শব্দ বাংলা অক্ষরে লেখার সুনির্দিষ্ট নিয়ম নেই। ফলে একই শব্দে নানারকম বানান হতে পারে। মূল ইংরেজি শব্দের পরই বাংলা উচ্চারণ ও প্রচলিত বাংলা প্রতিশব্দ থাকলে তা দেওয়া হয়েছে। তবে অপ্রচলিত বাংলা পরিভাষা। সাধারণত দেওয়া হয়নি। গ্রন্থটি মূলত স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের কথা বিবেচনা করে লেখা হয়েছে। বিষয়বস্তু যথাসম্ভব তথ্যভিত্তিক ও সহজ ভাষায় লেখার চেষ্টা করা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তক-বহির্ভূত বিষয়ে কিছুটা জ্ঞান লাভ হতে পারে একথা স্মরণ রেখে যথাসম্ভব স্বল্প পরিসরে বিষয়বস্তুর ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যে সমস্ত ইংরেজি পরিভাষা (technical terms) খুবই প্রচলিত, ব্যাখ্যার সময় সেই সব শব্দ ব্যবহার করতে দ্বিধা করেনি। প্রায় ১৮৫০ মূল পারিভাষিক শব্দ (technical terms) ও ব্যাখ্যা আনুমানিক ৭০,০০০ শব্দ এই অভিধানে স্থান পেয়েছে। বিজ্ঞানের কোন কোন শাখা থেকে কত সংখ্যক মূল শব্দ নেওয়া হয়েছে তা উল্লেখ করা হল। পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন-৬৩০, গণিত, সংখ্যাতত্ত্ব ও কম্পিউটার বিজ্ঞান-৪২০, জীববিজ্ঞান-৩০০, ভূবিদ্যা–২০০ ও কৃষিবিজ্ঞান-৩০০। সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কথা মনে রেখেই কৃষিবিজ্ঞান ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।
সৌমেন সাহা
সৌমেন সাহা, জন্ম ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৮০ সালে। খুলনা সেন্ট-জোসেফস্ উচ্চ বিদ্যালয় হতে মাধ্যমিক এবং খুলনা সরকারি সুন্দরবন আদর্শ মহাবিদ্যালয় হতে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সরকারি পিসি কলেজ, বাগেরহাট হতে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি যুক্তরাজ্যের লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে লন্ডন কলেজ অব বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড কম্পিউটিং হতে কম্পিউটার সায়েন্সে ডিপ্লোমাসহ বি.এসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। জনপ্রিয় বিজ্ঞান-লেখক হিসেবে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, মাসিক ও সাপ্তাহিক বিজ্ঞান পত্র-পত্রিকায় তাঁর প্রকাশিত লেখার সংখ্যা প্রায় দুই শতাধিক। তাঁর লেখা প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৭০-এর অধিক। তিনি খুলনার ঐতিহ্যবাহী প্রাণিক বিজ্ঞানাগার খুলনার কেন্দ্রীয় শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং একাধিকবার বিজ্ঞান প্রকল্প উদ্ভাবনের জন্য জাতীয়ভাবে পুরস্কৃত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি সংস্থা ঢাকায় কর্মরত আছেন। নিত্যদিনের জীবিকার গ্রাসাচ্ছাদনের বাইরে তার পুরােটা সময়ই লেখালেখি এবং প্রধানত বিজ্ঞানবিষয়ক লেখালেখিতে নিবেদিত। তার একমাত্র শখ বিজ্ঞান, গণিত, ইতিহাস বিষয়ক বই পড়াশােনা করা ও গবেষণা করা।