সেই কবে যৌবনের সূচনায় চারণের মতো ঘুরে ঘুরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের উপাদান আহরণ ও লিপিবদ্ধকরণের কাজ শুরু করেছিলেন তাজুল মোহাম্মদ, তারপর থেকে এ কাজে আর বিরাম ঘটেনি তাঁর। সিলেট অঞ্চলের গণহত্যা ো প্রতিরোধ বিষয়ে তাঁর গ্রন্থ পালন করেছিল পথিকৃতের ভূমিকা। এরপর প্রসারিত হয়েছে আপন কাজের ক্ষেত্র, বাংলাদেশের অন্য অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধ অবলম্বনে গ্রন্থরচনা করেছেন তিনি, সেই সঙ্গে ইতিহাসের আরো নানা অধ্যায় হয়েছে তাঁর বিবেচ্য। একাত্তরে সংঘটিত গণহ্ত্যাা ও মানবাবিরোধী অপরাধীদের স্বরূপ উন্মোচনে তাঁর গবেষণা, গ্রন্থরচনা ও আনুষঙ্গিক দিক কাজ বহন করে বিশেষ মূল্য। জাতির এক ঘোর দুর্দিনে দেশান্তরী হতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি : কিন্তু তারপরেও তাঁর ইতিহাস-সন্ধানী তৎপরতায় কোনো ছেদ পড়েনি। এরই ধারাবাহিকতায় নিবেদিত বর্তমান গ্রন্থ একাত্তরের বিভীষিকা ও সাহসী প্রতিরোধের বিভিন্ন কাহিনি মেলে ধরেছেন লেখক, ভয়ঙ্কর সেই অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন যাঁরা, দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছেন শত্রুর মোকাবেলায়, অকাতরে বিসর্জন দিয়েছেন প্রাণ এমন সব মানুষের কথক হয়েছেন তাজুল মোহাম্মদ। তাঁর রচনার মধ্য দিয়ে জাতির মহান মুক্তিসংগ্রামের প্রাণস্পন্দন অনুভব করতে পারবেন পাঠক, সেটাই এই গ্রন্থের বৈশিষ্ট্য, আজকের প্রজন্মের পাঠক-পাঠিকাদের জন্য এর তাৎপর্য তো আরো বিশাল।