ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ অনেক রস বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ আমাদের সোনার এই বাংলাদেশ। আর অজস্র গ্রামগঞ্জে গাঁথা এ বাংলাদেশ। সহজ সরল গ্রাম্য মানুষের আচার আচরণ অভ্যাস স্মৃতি সংস্কার কুসংস্কার-ঋদ্ধ ইতিহাস ঐতিহ্যের রূপরেখা দ্বারা নির্মিত বাংলাদেশের প্রকৃত পরিচয়। বৃহৎ বাংলাদেশের ইতিহাস রচনায় সাহায্যকারী গ্রামীণ মানুষের সাহিত্য শিল্প বিশ্বাস কুসংস্কার প্রবাদ প্রবচন বচন ধাঁধা ছড়ামন্ত্র ভাষা উপকথা গাঁথা সঙ্গীত নৃত্য বাদ্যযন্ত্র শিল্পক নাম মাহাত্য কেচ্ছা কাহিনী গীতিকা কিংবদন্তী ঐতিহ্য ইতিহাস বিশ্বাস ইত্যাদির বিষয়ানুগ সংক্ষিপ্ত অথচ গভীর গবেষণাসমৃদ্ধ এই গ্রন্থ। বাংলাদেশের অনুবিশ্বের সমাহার বলা যেতে পারে এই অকিঞ্চন আলোধর্মী প্রবন্ধগুলো।
গ্রামীণ সংস্কৃতি ব্যতিরেকে কোন দেশের ইতিহাস পরপূর্ণতা দাবি করতে পারে না। অকৃত্রিম ও সকল ইতিহাসের জননী উপেক্ষিত এই গ্রামীণ সংস্কৃতি। দেশে দেশে যত সার্থক ইতিহাস রচিত হয়েছে তার ষোল আনাই গ্রাম্য আবহের ফলশ্রুতি। বাংলাদেশকে অন্তৃর্দষ্টি মেলে জানতে হলে তার গ্রামীণ মানুষ, তার ভাষা সাহিত্য লৌকিক শিল্প প্রকৃতি, তার গ্রামীণ সমাজকে অবশ্যই বাস্তব দৃষ্টিতে উপলক্ষ্য সম্মুখে রেখে অত্র গ্রন্থের নিবন্ধগুলো রচিত হয়েছে গত ত্রিশ বছর ধরে।
সুধীবৃন্দ স্বাধীন সার্বভৌম রূপসী বাংলার ঐতিহাসিক একটি চালচিত্রের প্রকৃত পরিচয় অনুসন্ধানে ব্যাপৃত হলে বিফল মনোরথ হবেন না বলেই আমাদের প্রত্যাশা।
আলমগীর জলিল
জন্ম ১৪ই মার্চ ১৯২৮, বৃহত্তর রাজশাহী জেলার নওগাঁর মথুরাপুর গ্রাম (মাতুলালয়ে)। লেখাপড়া : বি.এ (পাস), ১৯৫১; এম-এ (বাংলা), ১৯৫৭; ডিপ্লোমা-ইন-এডুকেশন ১৯৫৫। বাংলা একাডেমীর রিসার্চ স্কলার হিসেবে সাড়ে তিন বছর ধরে “উত্তরবঙ্গের লোকসাহিত্য” বিষয়ে পিএইচ.ডি কোর্সের অভিসন্ধর্ভ রচনা করেন। বাংলা একাডেমী থেকে উপ-পরিচালক হিসেবে ১৯৮৮ সালে অবসর গ্রহণ। তারপর তেজগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে বাংলা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। প্রথম লেখা কবিতা ছাা হয় আজাদ-এর ‘মুকুলের মহফিল’-এ এবং কলকাতার শিশু সওগাত-এ ১৯৪৫-৪৬ সালে। তারপর থেকে কলকাতা ও ঢাকার নানা পত্রিকায় অজস্র লেখা প্রকাশিত। “২১শের সাহিত্য সঙ্গ” কর্তৃক “কবিরত” উপাধি লাভ (১৯৪৭)। প্রবন্ধ, শিশুসাহিত্য, গান, নাটক, ছড়া, গল্প, গবেষণাধর্মী রচনা, অুবাদ সাহিত্যের বিবিধ শাখায় তাঁর বিচরণ। ইংরেজী ও বাংলা দুই ভাষায় লিখে থাকেন। শিশুসাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্যে “কায়কোবাদ সাহিত্য মজলিস” কর্তৃক “দেওয়ান আব্দুল হামিদ” সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত।