বাঙালি জাতির খাদ্য সংস্কৃতি এক ঐতিহ্যের নাম। বর্তমানে বিদেশী খাবারের ভিড়ে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো হারাতে বসেছে। নতুন প্রজন্মের অনেকেই হয়তো এখনও অনেক ঐতিহ্যবাহী খাবারের নাম এবং স্বাদ সম্পর্কে অবগত নেই । কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী রান্নাগুলো। বিশিষ্ট রন্ধনশিল্পী এবং নাহার কুকিং ওয়ার্ল্ডের প্রধান নির্বাহী তার বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী রান্না : ১০০ রেসিপি বইটির ১ম, ২য়, ৩য় ও ৪র্থ খণ্ডের মাধ্যমে সঠিক ও নির্ভুলভাবে রান্নার রেসিপি সংরক্ষণ এবং সারা বিশ্বের বাঙালিদের কাছে পৌঁছে দিতে যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা প্রসংশনীয় । তার এই মহৎ কাজকে সাধুবাদ জানাই। রান্না একটি শিল্প। স্বাদ, গন্ধ, পরিবেশন এবং সৌন্দর্য্যের সমন্বয়ে তৈরি হয় একটি খাবার। যা আমাদের ক্ষুধা নিবারণের পাশাপাশি মনকে তৃপ্ত করে। রন্ধনশৈলিকে শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে রন্ধনশিল্পী এবং গ্রাম ও শহরের সকল গৃহিণীদের অবদান অপরিসীম। সারা বিশ্বে বাংলাদেশের খাবার, রেসিপি পৌঁছে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন রন্ধনশিল্পীরা। যুগ যুগ ধরে আমাদের নারীরা সমাজ নির্মাণে সমান ভূমিকা পালন করে আসছেন। গৃহস্থালির কাজ, সন্তান লালন-পালনে নারীদের সংশ্লিষ্টতা সর্বোপরি নারীদের এই মেধা, শ্রম, ব্যয়কে বিশ্লেষণ করলে আর্থিকভাবে একটি পরিবারের অর্থ সাশ্রয় হয়, তা কখনও মূল্যায়ন করা হয় না। আমাদের সমাজের অধিকাংশ নারী সাংসারিক কাজ এবং সংসার পরিবারকে এতটাই ভালোবাসেন যে নিত্যদিনের এই কাজগুলোকে ঘিরেই তারা বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা খোঁজে। সারাজীবন ধরে আমাদের নারীরা ঘরে এত কর্মব্যস্ত থেকেও সংসার ও সমাজে নিজস্ব কোনো কর্মপরিচয় গড়ে তুলতে পারেনি এবং কাজের স্বীকৃতিটুকু পাননি। প্রতিটি নারীর নিজের শিক্ষা মেধা যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে সমাজ ও পরিবারে অর্থনৈতিক অবদান রাখা এবং আত্মনির্ভরশীল করে নিজেকে গড়ে তুলতে নারীদের নিজস্ব কর্মপরিচয় থাকা উচিত রন্ধনশিল্প নারীদের জন্য তেমনই একটি ক্ষেত্র। হাসিনা আনসার নিজের মেধা শ্রম অধ্যাবসায় দিয়ে নিজের একটি পরিচিতি তৈরি করেছেন রন্ধনশিল্প জগতে। রন্ধনশিল্পর সঙ্গে যুক্ত অসংখ্য নারীদের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে আলোকদ্যূতি নিয়ে এগিয়ে চলেছেন এই আলোকিত নারী। অভিনন্দন শুভকামনা এবং সমৃদ্ধি কামনা করছি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ১০০ রেসিপি বইটির ।
হাসিনা আনছার
মুক্তিযোদ্ধা বাবার মেধাবী সন্তান নারী উদ্যোক্তা হাসিনা আনছার নাহারের জন্ম ১৯৮০ সালে কুষ্টিয়া শহরের আমলা পাড়ায়। ৫ ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোটো নাহার। ১৯৯৫ সালে কুষ্টিয়া চাঁদ সুলতানা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে মাধ্যমিক পরীক্ষায় স্টার মার্কস পেয়ে পুরো বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেন এবং বিদ্যালয়ে থেকে পুরস্কার পান। কুষ্টিয়া সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে ১৯৯৭ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষায় Accountinga লেটারসহ পাস করেন। ছোটোবেলা থেকেই বাবার মতো সমাজসেবামূলক কাজ করার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন । মিডিয়া ব্যক্তিত্ব নাহার মূলত মায়ের হাত ধরে রান্নার জগতে আসেন নাহার। পরিবারের ও শশুরবাড়ি থেকে অনেক উৎসাহ পেতে থাকেন। ২ ছেলের পরামর্শে নাহার ক্যাটারিং সার্ভিস চালু করেন। নাহারের প্রতিষ্ঠান এর নাম Nahar Cooking World. নাহার মাল্টি কুইজিনের উপর Training নিয়েছে সে কারণে সব ধরনের খাবার তৈরি করতে পারেন। বেকিং ও কুকিং সব রকম খাবার সরবরাহ করেন। সেই সঙ্গে নিজের প্রতিষ্ঠান থেকে সব রকম কুকিং ও বেকিংয়ের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। তার প্রতিষ্ঠান থেকে রান্নার প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক নারী উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে । নাহার ICT International Culinary Institute থেকে এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এর অধীনে professional chef course level-1 সম্পূর্ণ করে Master chef Daniel C Gomes Institute - G প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ চলাকালীন সময়ে হোমশেফ থেকে British Colombia school-এর বাচ্চাদের ও অভিভাবকদের ইজি ওয়েতে টিফিন বানানোর খরাব ঢ়ড়মধসসব-এর অফার করেন। নাহারের প্রথম কুকিং ংযড়া ছিল এটা। সবাই খুব পছন্দ করে পরবর্তীতে British Colombia school-এর প্রধান শিক্ষক এর অনুরোধে নাহার কুকিং ক্লাস নেন। নাহার ক্যাটারিং ব্যবসার পাশাপাশি নিয়মিত রান্নার প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন অনলাইন এবং অফলাইন-এ। তিনি বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের কুকিং-এর এসেসর এবং স্বনামধন্য প্রশিক্ষক ।
Title :
বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী রান্না ১০০ রেসিপি (হার্ডকভার)