"বাঙলা ভাষার শত্রুমিত্র" বইটি সম্পর্কে কিছু কথা:
বায়ান্নোর বিদ্রোহের সাড়ে চার দশক ও স্বাধীনতা অর্জনের প্রায় তিন দশক পরেও বাঙলা ভাষা প্রতিষ্ঠা পায় নি বাঙলার জীবনে সমাজে রাষ্ট্রে। কেননা পায় নি, তার উত্তর খুঁজতে গিয়েই জন্মেছে এ-তীক্ষ্ণ গ্রন্থটি।, ডক্টর হুমায়ুন আজাদ। বাঙলার রাষ্ট্র-ও সমাজ-নিয়ন্ত্রকদের চরিত্র উদঘাটন করেছেন এ-বইটিতে, ও বের করেছেন বাঙলা ভাষার সাথে তাদের শক্রতার সূত্র। এ-গ্রন্থ জানায় যে বাঙলা ভাষা ও শােষিতদের ভাগ্য এক সূত্রে গাঁথা; একের মুক্তি ও প্রতিষ্ঠার জন্যে অপরিহার্য অন্যের মুক্তি ও প্রতিষ্ঠা। বিপুল তথ্য ও । উপাত্তের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণে একটি সত্য বেরিয়ে এসেছে যে আমাদের শাসক, প্রশাসক, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, শিক্ষানিয়ন্ত্রক অর্থাৎ রাষ্ট্র-ও সমাজ-নিয়ন্ত্রকেরা প্রতিক্রিয়াশীল আত্মস্বার্থ রক্ষার জন্যেই ব্যর্থ করে দিচ্ছে বাঙলা ভাষা ও । শােষিতদের প্রতিষ্ঠার সমস্ত উদ্যোগ। ডক্টর আজাদের ভাষ্য গভীর ও অনুপুঙ্খ; তাঁর ভাষা বিদ্যুৎ-তীক্ষ, ও অবিস্মরণীয় উক্তি-উজ্জ্বল। বাঙলা ভাষার শত্রু ও মিত্র- উভয় শ্রেণীকেই আলােড়িত করবে এ-গ্রন্থ।
হুমায়ুন আজাদ
হুমায়ুন আজাদ (২৮ এপ্রিল ১৯৪৭ - ১১ আগস্ট ২০০৪; ১৪ বৈশাখ ১৩৫৪ - ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন একজন বাংলাদেশী কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, সমালোচক, গবেষক, ভাষাবিজ্ঞানী, কিশোর সাহিত্যিক এবং রাজনৈতিক ভাষ্যকার। তিনি বাংলাদেশের প্রধান প্রথাবিরোধী এবং বহুমাত্রিক লেখক যিনি ধর্ম, মৌলবাদ, প্রতিষ্ঠান- ও সংস্কারবিরোধিতা, নিরাবরণ যৌনতা, নারীবাদ ও রাজনীতি বিষয়ে নির্মম সমালোচনামূলক বক্তব্যের জন্য ১৯৮০-র দশক থেকে ব্যাপক পাঠকগোষ্ঠীর দৃষ্টি আর্কষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
২০০২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি জার্মান কবি হাইনরিখ হাইনের উপর কাজ করার জন্য জার্মান সরকারের নিকট একটি বৃত্তির আবেদন করেছিলেন। ২০০৪-এর ৭ আগস্ট জার্মান কবি হাইনরিখ হাইনের ওপর গবেষণা বৃত্তি নিয়ে জার্মানি যান।
২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ১১ আগস্ট রাতে একটি পার্টি থেকে প্রত্যাবর্তনের পর আবাসস্থলে আকস্মিকভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন হুমায়ুন আজাদ। ১২ আগস্ট ফ্ল্যাটের নিজ কক্ষে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।