এক সময় বাংলার বুকে পেশাদার গল্পকার ছিল। তারা মাঠে-ঘাটে গল্প বলে বেড়াত। বড়ো কোনো মেলা বা আসরে তাদের আলাদা আসন থাকত। তেমনই এক কাল্পনিক গল্পকার সুদেব, যে লোকমান নামে এক পেশাদার গল্পকারের শিষ্য। বুড়ো একটা বটগাছের নিচে সাঁঝের আলোয় সুদেব গ্রামবাসীকে গল্প শোনায়। সেই নিয়মিত আসরে একদিন সে ওসমান দাদুর গল্প বলতে শুরু করে। কাব্যধর্মী এ উপন্যাস বা কাহিনিকাব্যটি গল্পকারদের গল্প বলার ঢঙে চলনের পটভূমিতে লেখা।
ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেরে বারো বছর বয়সে ওসমান ঘর ছেড়েছিল। নিজের দুহাতে গড়েছিল ভাগ্য। গল্পটি বলতে গিয়ে সুদেব আমাদের দেখিয়েছে চলনের বৈচিত্র্যময় জীবন। শুনিয়েছে ওসমানের জন্য, রাজহাসের সাথে বেড়ে ওঠা, নিরুদ্দেশ যাত্রা, সখির সাথে পরিচয়, কুড়ি বস্তা ধান নিয়ে ঘরে ফেরা, পনেরো হাত ডিঙি মাথায় করে হাটে যাবার গল্পসহ অসংখ্য কাহিনি।
সুদেবের মুখে ওসমানের গল্প শুনতে শুনতে আমরা সুদেবের গল্পও জানতে পারব। বাংলা রজনীর গল্প কেবল ওসমান বা সুদেবের গল্প নয়। এ গল্প বাংলার হাজারো মানুষের হাজারো রজনীর গল্প।