ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ পীরমাহমুদ সংগৃহীত-সঙ্কলিত ‘চিকিৎসাসংগ্রহ’-পুথিটি আয়ুর্বেদীয় চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট এবং ‘বিবিধসংগ্রহ’-পর্যায়ভূক্ত গ্রন্থ। আয়ূর্বেদের ইতিহাসে বাংলাদেশের কৃতিত্ব স্বল্প নয়। অনেক বাঙালি গ্রন্থকার অতীতকালে উত্তম গ্রন্থাদি লিখে আয়ূর্বেদের মঙ্গলসাধন করেছেন। আধুনিক কালেও বাংলা ভাষায় বহুসংখ্যক উল্লেখযোগ্য আয়ূর্বেদীয় গ্রন্থ রচিত হয়েছে। পীরমাহমুদ সংগ্রহীত-সঙ্কলিত বর্তমান ‘চিকিৎসাসংগ্রহৎ-গ্রন্থটি খ্রিষ্টীয় উনিশ শতকের মধ্যবর্তী সময়ে লিখিত। এই হস্তলিখিত গ্রন্থের ভাষা বাংলা ও লিপি মুখ্যত সিলেটীনাগরী। আয়ূর্বেদীয চিকিৎসাপ্রণালী এদেশের সনাতন এক চিকিৎসাপদ্ধতি। এই চিকিৎসাপদ্ধতি, অতি প্রাচীন হওয়া সত্ত্বেও, অপরাপর প্রাচীন বস্তু বা প্রথার মত কখনও প্রাচীনত্বের অন্ধকারে হারিয়ে যায় নি। এদেশের মানবস্বাস্থ্যসংরক্ষণে তা গুরুত্বপূর্ণ অবধান রেখে চলেছে। তাই উপলদ্ধি করা যায় : আয়ুর্বেদীয় চিকিৎসাপদ্ধতি নিশ্চিতভাবেই কোনও সদৃঢ় ভিত্তির উপরে প্রতিষ্ঠিত। সম্প্রতি বাংলাদেশে আয়ুর্বেদের নবজাগরণ সূচিত হচ্ছে। পীরমাহমুদের ‘চিকিৎসাসংগ্রহ’-গ্রন্থটি এক্ষেত্রে আমাদের উদ্দীপনার উৎসরূপে বিরাজমান থাকবে এবং আয়ুর্বেদের অমলিন দীপবর্তিকাস্বরূপ নিরস্তর আলো ছড়াবে।
আহমদ রফিক
প্রাবন্ধিক, কবি ও কলামিস্ট আহমদ রফিক (জন্ম: ১২ সেপ্টেম্বর, ১৯২৯) ছাত্রজীবন থেকেই সাহিত্য, সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক হিসেবে পরিচিত, তিনি প্রগতিশীল রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় তার শিক্ষাজীবন বারবার বিপর্যস্ত হয়। শিল্প ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও, মূলত সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করেন এবং বর্তমানে সম্পূর্ণ সাহিত্যকর্মে সক্রিয়। তিনি রবীন্দ্রচর্চা কেন্দ্র ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা, বাংলা একাডেমীর ফেলো এবং বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির জীবন সদস্য। তার উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধগ্রন্থের মধ্যে *শিল্প সংস্কৃতি জীবন* (১৯৫৮), *আরেক কালান্তরে* (১৯৭৭), *ভাষা আন্দোলন: ইতিহাস ও তাৎপর্য* (১৯৯১) এবং *রবীন্দ্রনাথের চিত্রশিল্প* (১৯৯৬) অন্তর্ভুক্ত। কবিতাগ্রন্থের মধ্যে *নির্বাসিত নায়ক* (১৯৯৬), *বাউল মাটিতে মন* (১৯৭০), *রক্তের নিসর্গে স্বদেশ* (১৯৭৯) উল্লেখযোগ্য। সাহিত্যক্ষেত্রে তার বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৭৯ সালে বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৯৫ সালে একুশে পদক এবং কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধি লাভ করেন।