জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি নাম নয়। বাংলাদেশের অপর নাম শেখ মুজিবুর রহমান। কারণ, মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু সমার্থক শব্দ। তাঁরই সুযোগ্য নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন দেশ, একটি পতাকা, একটি জাতি সত্তা। বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের, আন্দোলনের প্রতিটি মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুর নিত্যসহচর বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন। তিনি ছিলেন পরিবারটির প্রেরণা। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল দেশ স্বাধীন হবে। অসীম সাহসিকতায় নিরবে কাজ করে গেছেন দেশের ও দশের জন্য বঙ্গমাতা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালো রাতে একদল বিপথগামী সেনা সদস্য ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে বর্বর নৃশংস কাপুরুষোচিত হত্যাকা- চালিয়ে সপরিবারে জাতির জনককে নির্মমভাবে হত্যা করে। সেই অন্ধকার বিভীষিকাময় রাতে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় অলৌকিকভাবে বেঁচে যান। শেখ হাসিনা ভাইবোনদের মধ্যে সবার বড়। তাঁর তিন ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল। বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পর বাংলাদেশে নেতৃত্বের বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছিল। শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নির্বাচিত হন এবং ১৭ মে নির্বাসন শেষে দেশে ফেরেন। জনকের অসমাপ্ত স্বপ্নকে সফল করতে শুরু হয় তাঁর নবযাত্রা। সেই অভিযাত্রায় ‘সোনার বাংলা’ গড়তে আজো অক্লান্ত, সক্রিয় তিনি সুযোগ্য নেতৃত্ব দানে। বাংলাদেশে প্রতিটি ক্ষেত্রে যে উন্নয়ন ধারা বহমান তা বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত। কেবল মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণই নয় শেখ কামাল, শেখ জামাল স্বাধীন দেশে ক্রীড়া, শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতিতে উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক ভুমিকা রাখেন। তাঁদের কারণে ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক পরিবার হিসেবে আলোচিত ও সম্মানিত। বঙ্গবন্ধু পরিবারের যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি- এই তৃতীয় প্রজন্মের নতুন নেতৃত্বের প্রতি আমাদের সকল আকর্ষণ এখন কেন্দ্রীভূত। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, বাঙালি থাকবে, এ দেশের জনগণ থাকবে, ততদিনই বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার সবার অনুপ্রেরণার অসীম উৎস হয়ে থাকবেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে যে পরিবারটি সবচেয়ে আলোকিত প্রতিষ্ঠান হিসেবেও সমাদৃত, সেই পরিবারের গর্বিত সদস্যদের সংক্ষিপ্ত জীবনীর উপস্থাপনার সংকলন গ্রন্থ আবদুল্লাহ আল মোহন রচিত ‘বঙ্গবন্ধু পরিবার’ আগ্রহীজনের তৃষ্ণা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভুমিকা রাখবে বলেই প্রবলভাবে আশাবাদী।