ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ কৃত্তিবাসী রামায়ণে কথিত হয়েছে যে, ইনি যৌবনে রত্নাকর নামে দস্যু ছিলেন। পরে নারদ মুনির উপদেশে দস্যুবৃত্তি ত্যাগ করে ছয় সহস্র বৎসর এক স্থানে উপবিষ্ট থাকিয়া রামনাম জপ করেন। সেই সময়ের তাঁর সর্বশরীর (উইঢিপি) সমাচ্ছন্ন হয়। পরে তপস্যায় সিদ্ধিলাভ করে বল্মীক হতে উত্থিত হওয়ায় তিনি বাল্মীক নামে খ্যাত হন। অতঃপর অনেকে তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন।
মুনিবর একদিন শিষ্য ভরদ্বজি সমভি-ব্যাহারের সমসা-তীর্থে স্নান করতে তিনি তত্রত্য নৈসর্গিক শোভা সন্দর্শনে বিমুগ্ধ হয়ে ইতস্ততঃ বিচরণ করছেন, এমন সময়ে এক ব্যাধ তাঁর নিকটস্থ কামক্রীড়াপর ক্রৌঞ্চ-মিথুনের পুঃক্রৌঞ্চকে শরাঘাতে বধ করলো। তদ্দর্শনে মুনি অত্যন্ত শোকাভি-ভূত হলেন। সেই সময় তাঁর মুখ থেকে হঠাৎ এই করুণারসাত্নক কবিতা নির্গত হয়ঃ-‘মা নিষাদ প্রতিষ্ঠাং ত্বমগমঃ শাশ্বতীঃ সমাঃ।
যৎ ক্রৌঞ্চমিথুনাদেকমবধীঃ কামমোহিতম্”। বলা হয়ে থাকে এটিই আদি কবিতা। এইজন্য বাল্মীকি আদি-কবি নামে খ্যাত। মুনিবর শিষ্যগণসহ আশ্রমে উপবিষ্ট আছেন, এমন সময়ে ব্রহ্মা এসে বলিয়া স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করে শুনালেন। ব্রহ্মা বলিলেন, ‘শোকের সময় ইহা তোমার’ মুখ হইতে নিঃসৃত হইয়াছে, অতএব ইহা শ্লোক নামে অভিহিত হউক। তুমি এইরূপ শ্লোকে রামচরিত্যাখ্যায়ক রামায়ণ গ্রন্থ রচনা কর।’ তদনুসারে বাল্মীকি রামায়ণ রচনা করলেন।