সময় তখন রাত বারোটার কাছাকাছি। সারাদিন ধরে ৭৫০ বস্তা ত্রাণ বিতরণ শেষে, দিরাইয়ে সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে ফিরছি। সারাদিনের ক্লান্তি শেষে ত্রাণের বস্তায় হেলান দিয়ে ঝিমাচ্ছিলাম, কখন যে চোখ লেগে গিয়েছিল খেয়াল নেই। হঠাৎ প্রিয়ত আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে বললো যে, আমাদের পেছনে ডাকাত তাড়া করছে। আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম। প্রচণ্ড বুক কাঁপছে আমার। ডানে-বামে তাকিয়ে দেখি চারপাশটা ঘুটঘুটে অন্ধকার। মাঝিকে ডেকে বললাম যে মামা পেছনে টর্চ জ্বালান। টর্চের আলোয় দেখলাম মাঝবয়সী অনেকগুলো লোক ট্রলারের মধ্যে বাঁশ, ধারালো দা হাতে দাঁড়িয়ে আছে। আমার বুঝতে বাকি রইলো না ট্রলারগুলো যে গতিতে এগোচ্ছে, তাতে বড়জোড় আর দশ মিনিট সময় লাগবে আমাদের ট্রলারটা ধরতে। আমি সেনাবাহিনীকে অনবরত ফোন করতে থাকলাম কিন্তু কোন নেটওয়ার্ক পাচ্ছি না। হঠাৎ মাঝি আমাদের ডেকে বললো, আপনেরা একটা পলিথিনের মধ্যে আপনেগো মোবাইল আর টাকা-পয়সা একসাথে কইরা রাইখা দেন; নাইলে আইজ আর কেউ বাঁইচা ফিরতে পারবেন না!
তাসরিফ খান
আমার জন্ম ১৯৯৪ সালের জুন মাসে। চার ভাইয়ের মধ্যে আমি তৃতীয়। বাবা ছিলেন স্কুল শিক্ষক আর মা গৃহিণী। নেত্রকোনায় নিজ এলাকার অলিতে-গলিতে ছুটোছুটি আর খেলাধুলাতেই কেটেছে আমার শৈশব-কৈশোরের সময়টা। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় আমি খুব একটা মনোযোগী ছিলাম না। ইচ্ছে ছিলো অভিনয় করবো, নয়তো খেলোয়াড় কিংবা গায়ক হবো। তাই পড়াশোনায় খুব একটা ভালো ফলাফল কখনোই করতে পারতাম না। কোনোরকম উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ঢাকায় এসে পড়াশোনা শুরু করি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়টাতেই পুরোদমে গান নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিই। পরবর্তীতে কুঁড়েঘর নামে একটি ব্যান্ড তৈরির মাধ্যমে গান নিয়ে আমার পথচলা শুরু করি। এখন পর্যন্ত অনেকগুলো মৌলিক গান করার পাশাপাশি সমাজের দুঃস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি। ইচ্ছে আছে―যতোদিন বাঁচবো, গান গাইবো আর অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে নিজের ইচ্ছেগুলো পূরণ করে যাবো।