অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিল্পবোধের এক অনুপম স্বাক্ষর তাঁর বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী। বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী শুধু বাংলা সাহিত্যে নয়Ñবিশ্বসাহিত্যেরই এক অনবদ্য ও অবিস্মরণীয় শিল্পকীর্তি। প্রবন্ধগুলোর শিল্পমূল্য অসাধারণ ও অমূল্য। পি’রণ রূপদর্শীর মতো এখানে অবনীন্দ্রনাথ শিল্প ও সাহিত্যের রূপতত্ত্ব ও রসতত্ত্বের বিশ্লেষণ করেছেন। পাঠকের চেতনায় নান্দনিক দৃষ্টিকোণ সৃষ্টির ক্ষেত্রে এ বইয়ের অনন্য ভূমিকার কোনো দ্বিতীয় নিদর্শন আজও পাওয়া যায়নি। শিল্পসাহিত্যের রূপতত্ত্ব ও রসতত্ত্ব সংক্রান্ত জটিল বিষয়ের সহজ ও সরস পরিবেশন ঘটেছে এই অনন্য গ্রন্থটিতে। শিল্পকলার দুরূহ বিষয়ের আলোচনাও রূপময় হয়ে উঠেছে তাঁর ভাষা ও বর্ণনার গুণে। এ গ্রন্থ সম্পর্কে নন্দলাল বসু লিখেছেন : “শিল্পগুরু অবনীন্দ্রনাথের বাগেশ্বরী বক্তৃতামালা রূপকলার আলোচনার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী গ্রন্থ, এবং এ যুগে আমাদের মধ্যে রসবোধের উন্মেষসাধনে অতুলনীয় এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। বঙ্গসাহিত্যের এটি এক অমূল্য সম্পদ।” বাগেশ্বরী অধ্যাপকরূপে চিত্রকলার উপর অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেসব প্রবন্ধ পাঠ করেন সেগুলোই পরে (১৯৪১ সালে) বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী নামে সংকলিত আকারে প্রকাশিত হয়।
অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
নাম রিদয়, কিন্তু ছেলেটা আসলে ছিল হৃদয়হীন। যাকে বলে একেবারে বিচ্ছু ছেলে। নষ্টামি করেই দিন কাটত তার। মানুষ বল, পশুপাখি বল, কীটপতঙ্গ বলÑসব্বাই অতিষ্ঠ তার জ্বালাতনে। একদিন সেই বিচ্ছু রিদয় গণেশঠাকুরের পিছনে লাগল। এতে ভীষণ রেগেমেগে গণেশঠাকুর অভিশাপ দিলেন। দেখতে-না-দেখতে বুড়ো আঙুলের মতো ভয়ানক ছোট হয়ে গেল রিদয়। শেষাবধি যক হয়ে গেল সে। হায় হায়, কী করবে এখন রিদয়? গণেশঠাকুরের শাপে যক হয়ে যাওয়া রিদয় তারপর যা করল আর যা দেখলÑতাই নিয়েই এই কৌতূহলকর উপন্যাস, ‘বুড়ো আংলা’। এই কাহিনী দিয়ে লেখক পরিচয় করিয়ে দেন মাঠ-নদী-বন-পাহাড় দিয়ে গড়া অপরূপ এক বাংলাদেশের সঙ্গে। পরিবেশ বিষয়ক এমন অ্যাডভেঞ্চার উপন্যাস বাংলা শিশুসাহিত্যে বিরল।