ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ ‘বাদ্যযন্ত্র প্রসঙ্গ’ হিন্দুস্থায়ী সংগীতের বাদ্যযন্ত্রের উৎস-ইতিহাস এবং ইতিবৃত্ত নিয়ে রচিত বাংলাদেশের সৃষ্টির গোড়ার কথা থেকে শুরু করে বাদ্যযন্ত্রের প্রস্তুত-প্রণালী ব্যবহার ইত্যাদি বিষয় পৃথক ও বিস্তারিতভাবে এ গ্রন্থে আলোচিত হয়েছে।
বাদ্যযন্ত্র চার প্রকারের- তত, ফুৎকার, ঘন ও আনদ্ধ। এই চারপ্রকার বাদ্যযন্ত্র সম্পর্কে আলোচনা গ্রন্থের মূল বিষয়বস্তু। বাদ্যযন্ত্রের উৎপত্তি, গঠন ও বিকাশের ইতিহাস চমকপ্রদ। সংগীতের দুটি ধারা কণ্ঠ ও বাদ্য সংগীতের মধ্যে কোনটি আগে সৃষ্টি হয়েছে এ নিয়ে গবেষণার অন্ত নেই। কেউ বলেন কণ্ঠ সংগীত আগে, কেউ বলেন বাদ্য সংগীত। এরই প্রেক্ষাপটে প্রাচীনকাল থেকে প্রচলিত বাদ্যযন্ত্রের উৎস, নির্মাণ ও ব্যবহার সম্পর্কে তথ্যমূলক আলোচনা এ গ্রন্থের বিষয়।
সংগীত- ইতিহাসের যে-সকল সংগীতবিদ শাস্ত্রীয় সংগীতের অন্যতম অঙ্গ বাদ্যযন্ত্রের সৃষ্টি, বিকাশ ও প্রসারে অবদান রেখেছেন সে-সকল বাদ্যযন্ত্র-শিল্পীর জীবনচরিতও বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে।
বস্তুত হিন্দুস্থায়ী সংগীতের বাদ্যযন্ত্রের ইতিহাসে এক মূল্যবান দলিল-গ্রন্থ ‘বাদ্যযন্ত্র প্রসঙ্গ’।
লেখকের নিবেদন উপমহাদেশের সংগীতের ইতিহাসে কেবল দেশজ বাদ্যযন্ত্রের ইতিবৃত্ত নিয়ে এখন পর্যন্ত একক কোনো গ্রন্থ রচিত হয়নি। ভারত থেকে প্রকাশিত কোনো গ্রন্থে নাতিদীর্ঘ অধ্যায় হিসেবে কিছু কিছু বাদ্যযন্ত্রের ইতিবৃত্ত স্থান পেয়েছে। তাও বাদ্যযন্ত্রের সম্পূর্ণ ইতিহাস নয়। ‘বাদ্যযন্ত্র প্রসঙ্গ’ গ্রন্থখানা এদিকটা পরিপূরণে যথাসাধ্য সচেষ্ট হয়েছে।
দেশজ বাদ্যযন্ত্রের আবিষ্কারের গোড়ার কথা থেকে শুরু করে প্রতিটি যন্ত্রের প্রস্তুত প্রণালী পর্যন্ত পৃথক ও বিস্তারিতভাবে এ গ্রন্থে আলোচিত হয়েছে।
উচ্চতর সংগীত শিক্ষা পাঠক্রমে বাদ্যযন্ত্রের ইতিবৃত্ত একটা অপরিহার্য অধ্যায়। সংগীতের ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান লাভের জন্য বাদ্যযন্ত্রের ইতিবৃত্ত বা দেয়া সম্ভব নয়। মহাবিদ্যালয়ের সংগীত পাঠ্যসূচিতে বাদ্যযন্ত্রের ইতিবৃত্তের অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ফলে, এ-গ্রন্থ মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠ্যগ্রন্থ ও তথ্যগ্রন্থ (reference book) হিসেবে দুভাবেই কাজে লাগবে। অন্তত কিছুটা হলেও তাদের পাঠ্যগ্রন্থ ও তথ্য-গ্রন্থের অভাব মিটাবে।
সংগীত-পিপাসু পাঠক ও শিক্ষার্থীদের কাছে এ গ্রন্থ সমাদৃত হলে পরিশ্রম সার্থক বলে বিবেচনা করবো।