আমাদের বর্তমান জীবন নানাবিধ জটিলতায় আচ্ছন্ন। সময়ই একটি উপাখ্যান। চলমান বহুমুখী সংকটকে সাহিত্য শিল্পে গাথুঁনি দেওয়া সৃজনশীল লেখকের দায়বদ্ধতা। শাহমুব জুয়েল সমকালীন জীবনযাত্রা ও সংকটের কাহিনিকে অনুষঙ্গ করে গল্পের বিবরণে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। তাঁর গল্পে ছিন্নমূল মানুষের জীবন, বেদে শ্রেণি, খাল ও বিল দখল, ভন্ডামি, বহুবিবাহ, নারী লিপ্সা, পরিবেশ বিপর্যয়, সামাজিক দীনতা, তোষামোদি, কিশোর গ্যাঙ ও তাদের উৎপাত, পারিবারিক ভাঙন, তৃতীয় লিঙ্গের সামাজিক দুরত্ব, মুক্তিযুদ্ধের সময় ধূ ধূ মাঠ, বিভৎস লাশ এবং মুক্তিচেতনা গল্পকে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে হয়। গল্পে যখন এসব উপাদান সুবিন্যস্তভাবে ফুটিয়ে তোলা যায়, তখন তা হয়ে ওঠে সময়োপযোগী ও পাঠকপ্রিয়।
চমৎকার উপস্থাপন রয়েছে ‘ব্যাক বেঞ্চের বালিকা’ গল্পে। গল্পের মেয়েটি হতদরিদ্র কিন্তু নিজ চেষ্টায় গ্রাম্যসংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে। সাধারণ ঘর থেকে অসাধারণ মেধা ও সক্ষমতা নিয়ে গণমানুষের আইকন হয়ে ওঠে। অবিশ্বাস্য পারফর্মেন্সের কারণে জীবন হিমালয় জয়ী কন্যা। বাঙালি নারী হিসেবেও সে সৌভাগ্যবান ও জয়িতা। ‘ব্যাক বেঞ্চের বালিকা’ গল্পগ্রন্থে’ শাহমুব জুয়েল গল্পায়ন ও শিল্প পরিবেশনে প্রাণন্ত চেষ্টা করেছেন। আশাকরি ‘ব্যাক বেঞ্চের বালিকা’ গ্রন্থটি সকলের ভালো লাগবে।
আনোয়ারা সৈয়দ হক
কথাসাহিত্যিক
শাহমুব জুয়েল
শাহমুব জুয়েল জন্ম ০৯ জানুয়ারি, ১৯৮৫ খ্রি. চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার হাঁসা গ্রামে। লেখকের সম্পাদিত লিটলম্যাগ ‘বর্ণিল’। কবিতাগ্রন্থ : ‘কাঁচা রোদের সন্ধানে’ (২০১৭), ‘মুখোমুখি আহ্লাদী চিবুক’ (২০১৭), ‘বাংলা ব্যাকরণ : উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি’ (২০১৭), ‘উচ্চমাধ্যমিক সৃজনশীল বাংলা প্রথম পত্র’ (২০১৭); গল্পগ্রন্থ : ‘অথৈ সময়ের শ্বাস’ (২০১৮); প্রবন্ধগ্রন্থ : ‘কথাসাহিত্যে রাজনৈতিক দর্শন ও বিবিধ প্রবন্ধ’ (২০১৯); উপন্যাস : ‘সবুজডানা’ (২০২০), ‘সমুদ্রগামিনী’ (২০২০), ‘গিরিকন্যা’ (২০২১), ‘মেঘ বিদায়ের দিন’ (২০২২)। তিনি শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতা পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন। ¯স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পত্রিকায় কবিতা, গল্প, সাহিত্যসমালোচনা, নিয়মিত কলাম ও ফিচার লিখছেন। টেলিভিশনে শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছেন।