বইয়ের ফ্ল্যাপ
তাদের পরিচয় হয় শিল্পকলা একাডেমির নাটকে অভিনয় করতে এসে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের নাট্যতত্তের ছাত্র রঞ্জু আর বুয়েটের আর্কিটেকচারের ছাত্রী ফারজানা হক ইনিসী। বাস্তব জীবনের দুই বিপরীত অভিজ্ঞতার দুইজন ইনিসী ও রঞ্জু ‘রক্ত করবী’তে নন্দিনী ও অধ্যাপক চরিত্রে শিল্পকলায় অবতীর্ণ হয়। মঞ্চ থেকে নেমে তারা পরস্পরকে নিজেদের কাছে দেখতে পায়।
নাটকের অধ্যাপকের চরিত্র যেন বাস্তবের রঞ্জু যুক্তির সাথে জগতের মোকাবিলা হবে, এমন ধারণা তার। রঞ্জুর বেড়ে ওঠা আর বেঁচে থাকবার নানা পরতে আছে আকস্মিকতা, নিয়তির বহুবিচিত্র রঙ; তার চারপাশের বাস্তবতা আর মানুষ তাকে বারবার জীবনের অনিশ্চয়তা ও নির্মমতার সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়।
অন্যদিকে, ‘রক্ত করবী’র নন্দিনীর মতোই প্রাণবন্ত, মুক্ত বাতাসের বার্তাবাহী, প্রত্যয়ী ইনিসী। পুরনো, ক্লিশে কোনো প্রাচীরে তার বিশ্বাস নেই। আর্কিটেক্ট ফার্মের ইন্টার্নি ইনিসী। সেখানে আর্কিটেক্ট হুমায়ুন চৌধুরীর বিবেচনা আর দেখবার ক্ষমতায় মুগ্ধ হতে শুরু করে সে। দেশ-বিদেশে বিখ্যাত এই আর্কিটেক্ট ‘রক্ত করবী’র রাজার মতো নিজের চারপাশে দুর্ভেদ্য দেয়াল রচনা করে রাখেন। তার অক্ষমতার দেয়াল।
এই দেয়াল ভাঙতে চায় ইনিসী। ঠিক ‘রক্ত করবী’র নন্দিনীর মতো। আবার রঞ্জুর মাঝেও প্রাণময়তার বারতা ছড়িয়ে যায় ইনিসী। ঠিক সেই নন্দিনীর মতো।
মঞ্চের ‘রক্ত করবী’ রঞ্জু আর ইনিসীর ঘটনা পরম্পরায় যেন পুনরায় আবর্তিত হয়। আবর্তনের এক পর্যায়ে রঞ্জু আর ইনিসীর সামনে নাটকের বৃত্ত ভেঙে পড়ে, বাস্তবতার কর্কশ কঙ্কালের সামনে রঞ্জু আর ইনিসী নিজেদের আবিষ্কার করে; দেখতে পায় জীবনের আশ্চর্য কুহক।