কফিনের ভেতরে সায়ানাইড ফুলের গন্ধে আরিমাতানোর সমস্ত জীবন পুনঃপ্রদর্শিত হতে শুরু করলে সে দেখতে পেয়েছিল বারবার এড়িয়ে যেতে চাওয়া সত্যটা কী গভীর ব্যাপ্তি রেখেছে তার জীবনে। এমনও হতে পারত, আরিমাতানোর কবরের পাশে দাঁড়িয়ে তার বাবা-মা শিশিরের শব্দ দিয়ে তাকে ডেকে তুলত অনন্ত ঘুম থেকে। আরিমাতানো শিশিরের শব্দ শুনে জেগে উঠে বলত, আমাকে একটু আলো এনে দাও। দাদী তখন ছুটে গিয়ে ধরে নিয়ে আসতেন একদল জোনাকি। জোনাকির আলোতে আরিমাতানো দেখতে পেত, তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে কাছের মানুষেরা যাদের হাতভর্তি ফুল। আরিমাতানো হাসত আর আরিমাতানোর হাসিতে ফুল থেকে ঝরে ঝরে পড়ত মুক্তো। ক্যাম্পাস জীবনের শুরুতেই একটা প্রেম হয়ে গেলে জীবনের মানে খোঁজার আগেই পেয়ে যেত জীবনের অর্থ, মনের ভেতরে পড়ত না অন্য মনের মায়া। হয়তো নিজের ছায়ার সঙ্গে কথা বলতে বলতে আরিমাতানো একদিন আবিষ্কার করত, আয়নায় যা দেখা যায় তা আসলে সত্যি নয়।
এসবের কিছুই ঘটেনি। বরং জীবনের অর্থ খুঁজতে গিয়ে, পালাতে গিয়ে, আরিমাতানো বুঝতে পেরেছিল বাইরে থেকে যা দেখা যায় তা হয়ত আয়নার কোনো অংশ; যেগুলো দেখতেই শুধু একরকম, ভেতরে তার দ্বন্দমুখর মাদকতা। আরিমাতানো বুঝতে পেরেছিল, সে আসলে মানুষ হতে পারেনি।