আড়িয়াল খাঁ: ১৯৮১ সালের ৩০ মে। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের পরের সন্ধ্যা। বরিশালের হিন্দু-অধ্যুষিত ভাটি খানার তেরো বছরের ছেলে জাহেদ তার বাবার সঙ্গে যাচ্ছে আড়িয়াল খাঁ। তার মালেক হুজুর তাকে বলেছেন, 'তুমি নদীর জ্বলেন্ত পানি ধরবা আর কিছুই পাইবা না, গিরথিবি তো এত্তো ফালতু হয় নাই।'পৃথিবী এত ফালতু না হতে পারে, কিন্তু পৃথিবী নিঃসন্দেহে বিপজ্জনক এক ঘর, যে-ঘরের মেঝে ছাদে, আর ছাদ মেঝেয়। তাই নৌকায় ওঠার ঠিক আগে ফোরকান উদ্দিন নামের এক লোক জাহেদকে বলে বসলেন, “ওই ঘটনাডা নৌকায় কাউরে বলছ তো, জানবা যে-তোমার বাবার লগে নদীতে আইজ রাতে তুমিও ফিনিশ।' কোন ঘটনা? বিদ্দুত বিশ্বাস নামের একজনও একটু আগে তাকে বলেছেন, ‘ছুডো মিয়া, তাইলে বাপের লগে তুমিও মরতে যাও? ভরা বরোষায়?” আর জাহেদের বোন পারভিনের এত বড় সাহস, সে মেয়ে হয়েও একই আড়িয়ালখাঁর পাড়ে এসে ‘রাজা কনডম' খোঁজে? নদীর জল থেকে আওয়াজ উঠছে এক গা-কাঁপানো—মডি-মডি-মডি'। জানা গেল, প্রেসিডেন্ট জিয়া চট্টগ্রামে মারা যাননি। তিনি বৃষ্টির মধ্যে পালিয়ে এসেছেন তারই কাটা লাখুটিয়ার খালে। দু-দুটো পুরুষাঙ্গ কর্তিত হলো, আর এখন এই রাতের নৌকায় কয়লা ওমরের লোকেদের হাতে দা, বস্তা ও ইট। নৌ-পুলিশ নৌকা থামিয়ে জাহেদকে জিজ্ঞাসা করছে, ‘তুমি কি জানো দেশের পেরসিডেন্ট কোথায়? আর তিনি যদি নিহত হইয়া থাকেন, তাহা হইলে তার কবর কোথায়?' পৃথিবীর সবটাই ভেঙে পড়ছে ঠাঠাঠা, টাসটাস, দ্রিম, বুউম শব্দে। ট্যারর-ট্যারর।