আমি চোখ খোলার চেষ্টা করতেই ভড়কে গেলাম। কী আশ্চর্য; চোখের পাতা যেন গভীরভাবে আটকে গেছে! প্রবল ঘুমের ঘোরে থাকলে আমাদের চোখের পাতা যেভাবে আটকে থাকতে চায়, সেভাবে পাতা আটকে আছে। অনেক কষ্টে তাকিয়ে দেখি, ট্রেনের ভেতরে আমার সব বন্ধু আতংকিত দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আর বলছে, ‘অ্যাই, চোখ খোল, চোখ খোল।’ আমি তাকাতেই চিকু চেঁচিয়ে উঠল, ‘কুক, কী হয়েছিল তোর?!’ সব ঠিকঠাক চলছিল কিন্তু হঠাৎ এক দুঃস্বপ্ন আমাকে করে তুলেছে অস্বাভাবিক, অস্থির! কিছুদিন হলো কিম্ভুতকিমাকার এক স্বপ্ন আমাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। হয়তো স্বপ্ন বলাও ঠিক হচ্ছে না। স্বপ্ন তো রং, ঘ্রাণ, প্রাণস্পন্দনে এতটা বাস্তবিক হয় না। অদ্ভুতুড়ে কিছু ঘটছে আমার সঙ্গে! এটি কানেকশনের গল্প। এক সংযোগের গল্প। কারও মতে দুঃস্বপ্ন, কারও মতে আধিভৌতিক, আবার কারও মতে সমান্তরাল বিশ্ব! যাত্রা গহীন অরণ্যে। কটকা পয়েন্ট-জামতলা সৈকত-তারপর আড়ালের গল্প।
আসিফ মেহ্দী
সাহিত্যের প্রতি আসিফ মেহদীর ঝোঁক ছাত্রজীবন থেকেই। দেশসেরা দুই ফান ম্যাগাজিন ‘উন্মাদ’ ও ‘রস+আলােতে লেখার সুবাদে রম্যলেখক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন আগেই। সেই সূত্রে প্রথম বইটাও রম্যগল্পের। বেতাল রম্য নামের সেই বইয়েই আসিফ মেহদী লাভ করেন তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা। এরপর একে একে প্রকাশিত তাঁর প্রতিটি বই শুধু পাঠকপ্রিয়তাই লাভ করেনি, উঠে এসেছে বেস্ট সেলার বইয়ের তালিকায়।
বর্তমানে লিখছেন দেশসেরা ম্যাগাজিন ‘কিশাের আলাে বিজ্ঞান আনন্দ ও বিজ্ঞান চিন্তা’তে। ব্যঙ্গ আর হাসির সঙ্গে গভীর জীবনবােধের প্রতিফলন ঘটিয়েই আসিফ মেহদী এ সময়ের জনপ্রিয় লেখকদের কাতারে নিজের অবস্থানটা বেশ পাকাপােক্ত করে ফেলেছেন। সম্প্রতি এনটিভিতে প্রচারিত তার লেখা নাটক ‘অ্যানালগ ভালােবাসা’-র বিষয়বস্তুর জীবনঘনিষ্ঠতা দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়েছে। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা চৌদ্দ।
এসএসসি ও এইচএসসি দুই পরীক্ষাতেই ঢাকা বাের্ডে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্ট্যান্ড করেছেন আসিফ মেহদী। বুয়েট-এ ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশােনা করেছেন। ভালাে ফলাফলের স্বীকৃতিস্বরূপ ছাত্রজীবনে পেয়েছেন ‘বিমানবাহিনী প্রধানের শ্রেষ্ঠ মেধা ট্রফি নটরডেম। কলেজ থেকে ‘অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সিলেন্স' বুয়েট থেকে একাধিকবার ‘ডীন স্কলারশিপ’ ঢাকা শিক্ষা বাের্ড থেকে একাধিকবার ট্যালেন্টপুলে ‘বাের্ড স্কলারশিপ এবং আরও নানাবিধ পদক ও সম্মাননা। ৩৩তম বিসিএস পরীক্ষায় নিজ ক্যাডারে ১ম স্থান অধিকার করে বর্তমানে বাংলাদেশ বেতারের গবেষণা ও গ্রহণ কেন্দ্রে সহকারী বেতার প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর সহধর্মিনী মৌবীণা জ্যাকলিন বারি পেশায় ডাক্তার।