একটি কুঁড়ি দুটি পাতাই আড়াইপাতা। চা-বাগানের চা-শ্রমিকদের জীবনের সঙ্গে নামটি যেন গভীরভাবে মিশে আছে। আড়াইপাতার নামের মতো চা-বাগানের মানুষগুলোর জীবন যেন আধা আধা ভাগ হয়ে যায়। এ যেন অপূর্ণ জীবনের খণ্ড খণ্ড চিত্র। চা-শ্রমিকদের প্রেম-ভালোবাসা, হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, প্রেম-ভালোবাসার বিষয়াদির চিত্রও উঠে এসেছে। সনাতন, বাবুলাল, রঘু বাউরি, বুধু, রামরুপান তাঁতি, মালতি, মহুয়া, ছায়ারানি কিংবা অনিলাবালা, তারামণি, সুখমণি চরিত্ররা ওদের মতো করেই কথা বলে।
পুজোতে ওদের আনন্দ ওদের চিরাচরিত জীবনের প্রতিচ্ছবি। যাত্রাপালার বিষয়টি হয়ে ওঠে উৎসাহের কেন্দ্রবিন্দু। ওদের বঞ্চনা, ওদের সংগ্রাম আর সে সংগ্রামে বাবুলালের প্রাণোৎসর্গ সবার জন্য কল্যাণ বয়ে আনে। মহুয়ার প্রেম কিংবা সুজিতের নারী লিপ্সা চা-বাগানের অন্দরমহলের গল্প হয়ে ওঠে। বুধুর প্রেম ও রিরংসা হয়ে ওঠে তার স্বার্থসিদ্ধির গল্প। সনাতনের দুখী মনটা সবশেষে পেল কি কোনো সুখে ঠিকানা? লোভী ম্যানেজার আর সুযোগসন্ধানী কয়েকজন বাবুর হাত থেকে সনাতন কীভাবে সবাইকে রক্ষা করবে? আনোয়ারবাবুর গন্তব্য কোথায়? জানতে হলে পড়তে হবে, চা-শ্রমজীবীদের জীবনালেখ্য ‘আড়াইপাতা’।
মহি মুহাম্মদ
মহি মুহাম্মদ ফটিকছড়ির আছিয়া চা-বাগানে ১৯৭৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। চা-বাগানের আলাে-বাতাসেই বেড়ে উঠেছেন তিনি। তরুণবেলা থেকেই লেখালেখি। সমাজের প্রান্তজনরা তার গল্পের চরিত্র। তার গল্পগ্রন্থ অহল্যাকথা, সুচেতনা ও হরিশ্চন্দ্রলাইন ও কয়েকজন শেফালির গল্প। তিনি উপন্যাসও লিখেছেন—আড়াইপাতা, চা-বাগান শ্রমিকদের জীবন নিয়ে। ঘাম-কাম, ক্রোধ-উদারতা, প্রতিশােধ-প্রতিরােধ নিয়ে চাশ্রমিকের জীবনচিত্র আঁকার চেষ্টা আড়াই পাতায়।
ময়নাদ্বীপ, পদ্মানদীর মাঝির অনুসরণ নয়, যদিও পদ্মানদীর মাঝির প্রায় সকল চরিত্র ময়নাদ্বীপে উপস্থিত। ময়নাদ্বীপ পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করেছে। মেনকায় আছে অসহায় এক নারীর জীবনের করুণকাহিনি। ঘাইহরিণীতে ঘুণেধরা সমাজব্যবস্থার নতুন এক দিগন্ত আবিষ্কারের চেষ্টা। পাশ্চাত্য হাওয়ায় বদলে যাচ্ছে চিরচেনা সমাজ। এ উপন্যাসে সেই সমাজকে তিনি নতুনভাবে আঁকতে চেয়েছেন।
কফিনের উইলি (২০১৮) কফিনের আত্মার সঙ্গে এক পিতার অসম যুদ্ধের কাহিনি।