পারস্য থেকে মোগল সাম্রাজ্যে আসা সুদর্শন এক যুবক, নাম ঈশান । তার স্থান হয়েছিল সপ্তগ্রামের শত বছরের পুরনো একটি মন্দিরে । ভাগ্যের নির্মমতায় মন্দিরে বেশি দিন অবস্থান করতে পারেনি ঈশান। ঘটনাক্রমে তার স্থান হয়েছিল আগ্রার প্রাসাদে। তখন মোগল সাম্রাজ্যের সম্রাট ছিলেন নূর-উদ-দীন মুহাম্মাদ জাহাঙ্গীর। জাহাঙ্গীরকে একজন মদ্যপ, চরিত্রহীন সম্রাট হিসেবে আখ্যায়িত করা হলেও অনেক ঘটনা আছে যে ঘটনাগুলো দ্বারা এমনটাই পরিলক্ষিত হয় --তিনি ছিলেন একজন দক্ষ প্রাসাশক এবং যোগ্য সম্রাট । সততা, আদর্শ, নৈতিকতা, ব্যক্তিত্ব দিয়ে জাহাঙ্গীরের আস্থা অর্জন করে ঈশান । আগ্রায় এসে অ্যাথিনার প্রেমে পড়েছিল সে । অ্যাথিনা একটি সাধারণ পরিবারের মেয়ে। প্রয়োজনের তাগিদে যুক্ত হয়েছিল একটি নাট্যদলে । এটাই ছিল অ্যাথিনার জীবনের বড়ো ভুল । আর এই ভুলটাই অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায় অ্যাথিনার সামনে । অভিশপ্ত জীবনে আর্শীবাদ হয়ে এসেছিল ঈশান। কিন্তু,ভাগ্য অ্যাথিনার অনুকূলে ছিলনা । প্রিয়তমা অ্যাথিনা ছাড়া এই বিশ্বভূখণ্ডে ঈশানেরও আর কেউ নেই। ইচ্ছা করলেই প্রিয়তমাকে কাছে পেতে পারতো কিন্তু দায়িত্ববোধ তাকে দিনের পর দিন দূরে সরিয়ে রেখেছে প্রিয়তমার কাছ থেকে। ঈশান জানেনা তার বাবা -মা কারা। ছয় মাস বয়স থেকে যাদের আশ্রয়ে বেড়ে উঠেছে তারাও গত হয়েছেন । ঈশানের সকল ভাবনাই যেন অ্যাথিনাকে নিয়ে। অ্যাথিনা যে জীবনকে অভিশপ্ত মনে করতো সেই অভিশপ্ত জীবন থেকে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ঈশান। কিন্তু, সময়ের পরিক্রমায় পরাধীনতার শিকলে বন্দি হয় অ্যাথিনা । শুরু হয় আরো কঠিন সময়। তার এই পরাধীন জীবন থেকে মুক্ত করতেই রক্তে রঞ্জিত হয় ঈশানের তরবারি। ঈশান ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ কোন চরিত্র নয়। তার গল্প কেউ লিখবেনা । তাই নিজের জীবনের গল্প নিজেই লিখতে চেয়েছিল। কিন্তু, সম্ভব হয়নি । ঈশান,অন্য অনেকের গল্প লিখলেও নিজের গল্প লিখতে পারেনি।
প্রেম,আত্মত্যাগ,ট্রাজেডি,যুদ্ধ,বিদ্রোহ, দায়িত্ববোধ এবং রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের উপাখ্যান, ’’ অন্তিম যাত্রা ”