অংশী : মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ, শরণার্থীদের জীবন ও নারী-পুরুষ রহস্যভিত্তিক উপন্যাস
কাহিনীক্রমের মূল আকর্ষণ অশোক। সে এক উঠতি বয়সের তরুণ। নিজদেশ তদানীন্তন পূর্বপাকিস্তান (বাংলাদেশ) থেকে পশ্চিমবাংলার শিলিগুড়িতে মামা বাড়িতে বাল্য, কৈশোর কাটিয়ে যৌবনে পদার্পণ করেছে। কলেজ অবদি লেখাপড়া শেষ করে ভারতের রেল বিভাগে চাকরি পেয়ে যায় অশোক। স্বল্পভাষী মুখচোরা অশোক মামাত বোনের বান্ধবী লীলার প্রতি আকৃষ্ট হয়। লীলাও তার প্রতি আসক্ত হয়। ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ চলার এক পর্যায়ে অশোক খবর পায় যে তার বাবা-মা বোন ও ভগ্নিপতি সীমান্ত পার হয়ে আসামের মানিকচরের এক শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। অসহিষ্ণু অশোক শিলিগুড়ি থেকে মানিকারচর চলে যায় স্বজনদের খোঁজে। আত্মত্যাগ, রাজনৈতিক ধারা, ষড়যন্ত্র, নানামুখ দোদুল্যমানতা, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি, অসহায় শরণার্থীদের জীবনপ্রবাহ এবং তাদের নিয়ে দুই বাংলার ধূর্ত শোষকশ্রেণীর অবৈধ ব্যবসা, রাজাকার-আলবদর তথা স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক অপশক্তির ঘৃণ্য কার্যকলাপ ইত্যাদি বহুবিধ ঘটনার সাক্ষী হয় অশোক।
তপন কুমার রুদ্র জম্ম: ১৫ আষাঢ়, ১৩৫৭ বঙ্গাব্দ, ইংরেজি ১ জুলাই, ১৯৫০। পেশায় ইংরেজি বিষয়ের অধ্যাপক। সর্বশেষ কর্মস্থল বেগম রোকেয়া সরকারি কলেজ, রংপুর। প্রফেসর পদে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে চাকুরি থেকে অবসর নিয়েছেন। বাবা বেণীমাধব রুদ্র আর মা জীবনবালা রুদ্র দু’জনই প্রয়াত। এদের আদি নিবাস বৃহত্তর ঢাকার বিক্রমপুরের বজ্রযোগিনী গ্রামে। তবে তপন রুদ্রের অজম্ম বেড়ে ওঠা উত্তরবঙ্গের কুড়িগ্রাম জেলা শহরে। লেখাপড়া প্রথমত কুড়িগ্রাম রিভারভিউ হাইস্কুল, তারপর উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ এবং স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে পড়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। স্থায়ী নিবাস পুরাতন পোস্ট অফিস পাড়া, কুড়িগ্রাম শহর। লেখালেখির প্রতি আগ্রহ ছাত্রজীবন থেকেই। ছাত্ররাজনীতির সাথে সংশিষ্টতা ছিল গভীর। তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের বিভিন্ন ইউনিটে কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ছাত্রজীবন শেষে সাংস্কৃতিক আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট হন। তিনি নয় বছরের ও বেশি সময় উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় সংসদের সহ সভাপতি ছিলেন। কবি বা লেখক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবার ব্যবসায়িক মনোভাব তিনি আস্থা রাখেন না। স্কুল কলেজের বার্ষিকী, বিভিন্ন বছরে একুশে সংকলংন এবং স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় তার লেখা কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ ইত্যাদি ছাপা হতো। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য প্রচুর গীতিনক্শা লিখতেন একসময়ে। তবে অধ্যাপনা জীবনেই তিনি শুরু করেন মূল লেখালেখির কাজ। স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক, সাপ্তাহিক এবং সাময়িকীগুলোতে অসংখ্য লেখা প্রকাশ পেলেও পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ প্রকাশে এতদিন বল যায় পিছিয়েই ছিলেন। তাঁর অন্যান্য গ্রন্থ : ‘কবিতায় শ্রেণীঘাত’ (একটি বহুমাত্রিক কাব্যগ্রন্থ), ‘সীমানার সাথে যুদ্ধ’ প্রবন্ধ ‘মাকে বলা আমার কিছু মিথ্যে কথা।’ (কাব্যগ্রন্থ)
তপন কুমার রুদ্র
Title :
অংশী : মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ, শরাণার্থীদের জীবন ও নারী-পুরুষ রহস্যভিত্তিক উপন্যাস