দরিদ্র মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে নিয়োজিত একটি প্রতিষ্ঠানে ত্রিশ বছর চাকরি শেষে অবসর নিয়েছেন আনছার আলী। চাকরিকালে নিজের চাকরি স্থায়ী হওয়া এবং শেষে পেনশন পাওয়ার জন্য তিনি অ্যাসোসিয়েশনে যুক্ত হন। এই পেনশন প্রাপ্তির সাথে জড়িত তার দুটো স্বপ্ন। স্ত্রীর জন্য সদরে একটি বাড়ি আর বড় ছেলে আফুকে আমেরিকা পাঠানো। চাকরি শেষে তিনি অ্যাসোসিয়েশন নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে থাকেন পেনশনের আশায়। নেতারা তাকে মিথ্যে আশ্বাস দেন, সব হবে, সময় লাগবে, চ‚ড়ান্ত পর্যায়ে আছে ইত্যাদি ইত্যাদি। সহজ-সরল আনছার আলী তাদের কথায় বারবার আশ্বস্ত হন। অনেক বিলম্বে হলেও সহকর্মী হারিছ ভঁ‚ইয়া তার ভুল ভাঙানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু পারেন না। অবশেষে ম্যানেজার মির্জা রইছ উদ্দিনের যুক্তি শুনে একসময় তার ভুল ভাঙে। ফলে প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী আনছার আলীর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। পেনশনের স্থলে তিনি যে গ্র্যাচুইটি পাবেন তা দিয়ে স্ত্রী-সন্তানের কোনো আশা বা চাহিদা পূরণ হবার নয়। কী জবাব দেবেন তিনি স্ত্রী-সন্তানকে? কেমন করে তিনি মুখ দেখাবেন তাদের! এসব কারণে অনিবার্য হয়ে পড়ে তার নিজেকে লুকিয়ে ফেলা। মধ্যবিত্ত জীবনের এক চিরন্তন ছবি ফুটে উঠেছে আনছার আলীর গৃহত্যাগ উপন্যাসে, যা সকল পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দেবে।
হুমায়ূন কবির
হুমায়ুন কবিরের জন্ম নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার দেউটি গ্রামে ১৯৫৯ সালে। বাবা জালাল আহমেদ ও মা জফুরা বেগম। লেখালেখি শুরু ছাত্রাবস্থায়। বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও সাময়িকীতে তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়েছে। মাঝে দীর্ঘ বিরতি। পুনরায় ফিরে এলেন লেখালেখির ভুবনে। কবিতা, উপন্যাসসহ ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর ছয়টি বই। ইতিপূর্বে প্রকাশিত তাঁর উপন্যাস কানফুল, মেঘনাপারের শেফালী ও কবিতা অন্তহীন দীর্ঘশ্বাস পাঠক সাদরে গ্রহণ করেছে। বর্তমানে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হুমায়ুন কবির নোয়াখালী কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেছেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স করেছেন, কিন্তু চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়া হয়নি। স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা কোর্স সমাপ্ত করেছেন সাংবাদিকতায়। তিনি দুই কন্যা ও এক পুত্রসন্তানের জনক। তারা হলো যথাক্রমে সালমা ফৌজিয়া সুমি, শারমিন ফৌজিয়া ও সাইফুল কবির সোয়েব। স্ত্রী নাজমুন নাহার গৃহিণী।