১৯৭১ ছিলাে ১৯৪৭-এর সংশােধন; আমরা ওই বছর মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলাম, একটি স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলাম।
আমাদের অজস্র স্বপ্ন ছিলাে- গণতন্ত্রের, সমাজতন্ত্রের, ধর্মনিরপেক্ষতার, বাঙালিত্বের, এবং সাধারণ মানুষের আর্থিক সচ্ছলতার। আমরা কোনাে স্বপ্নকেই সফল করতে পারি নি।
হত্যা করা হয়েছে বাঙলাদেশের স্থপতিকে, রক্তের বন্যা বয়ে গেছে; সামরিক স্বৈরাচারীরা এসে দেশকে | পর্যদস্ত করেছে।
বর্তমানে বাঙলাদেশ বাস করছে ভয়ের মেঘমালার নিচে। হুমায়ুন আজাদ একান্ত ব্যক্তিগত ভঙ্গি ও ভাষায় বর্ণনা করেছেন বাঙলাদেশের বিপর্যয়ের ইতিবৃত্ত, লিখেছেন একটি বেদনাহত বই।
এ-বই বাঙলাদেশের দেহ ও হৃদয়ের অপার বেদনার প্রকাশ; হাহাকার নয়, নিঃশব্দ রােদন।
হুমায়ুন আজাদ
হুমায়ুন আজাদ (২৮ এপ্রিল ১৯৪৭ - ১১ আগস্ট ২০০৪; ১৪ বৈশাখ ১৩৫৪ - ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন একজন বাংলাদেশী কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, সমালোচক, গবেষক, ভাষাবিজ্ঞানী, কিশোর সাহিত্যিক এবং রাজনৈতিক ভাষ্যকার। তিনি বাংলাদেশের প্রধান প্রথাবিরোধী এবং বহুমাত্রিক লেখক যিনি ধর্ম, মৌলবাদ, প্রতিষ্ঠান- ও সংস্কারবিরোধিতা, নিরাবরণ যৌনতা, নারীবাদ ও রাজনীতি বিষয়ে নির্মম সমালোচনামূলক বক্তব্যের জন্য ১৯৮০-র দশক থেকে ব্যাপক পাঠকগোষ্ঠীর দৃষ্টি আর্কষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
২০০২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি জার্মান কবি হাইনরিখ হাইনের উপর কাজ করার জন্য জার্মান সরকারের নিকট একটি বৃত্তির আবেদন করেছিলেন। ২০০৪-এর ৭ আগস্ট জার্মান কবি হাইনরিখ হাইনের ওপর গবেষণা বৃত্তি নিয়ে জার্মানি যান।
২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ১১ আগস্ট রাতে একটি পার্টি থেকে প্রত্যাবর্তনের পর আবাসস্থলে আকস্মিকভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন হুমায়ুন আজাদ। ১২ আগস্ট ফ্ল্যাটের নিজ কক্ষে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।