‘এখানে কথা বলার মানুষও খুব একটা নেই। বেশিরভাগ সময় বিছানার পাশে জানলা দিয়ে বাইরের আকাশ আর বৈদ্যুতিক তারে একটা শালিক দেখেই কেটে যায় আমার। এই একঘেয়ে ক্লান্তিকর শুয়ে থাকার প্রতিটা মুহূর্ত্তে টের পাই, জীবন আনন্দময়। তখন মনে হয়, আমরা প্রবল তৃষ্ণা নিয়ে যা চাই, তা পাই না। রাত দুপুরে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলে অন্ধকারে পাশের বিছানা থেকে মা’র কান্না শুনতে পাই। বাবা বিরক্ত মুখে তাকে চাপা গলায় ধমক দেয়, যা হবার হবে। এত চিন্তা করো কেন?
আমি আবার ঘুমিয়ে পড়ি। মাকে একদিন বললাম, মা, আমার মনে হচ্ছে, আমি আর বাঁচবো না।’
এই গল্পটা ফারিয়ার। সে কি একজন মৃত্যুপথযাত্রী? তার বেড়ে ওঠা নিঝুম মফস্বলের দুরন্ত বন্ধুদের এ্যাডভেঞ্চারের গল্পও এটা। মা বাবা আর দাদিকে নিয়ে তার ছোট্ট পরিবার। তারা প্রত্যেকেই অদ্ভুত। বাবা সবসময় হেলমেট পড়ে ঘুরে বেড়ায়। দাদি পালেন এক এতিম ভূতের বাচ্চা। মায়ের বিচিত্র স্বভাব ফারিয়ার মধ্যে তৈরি করে অলৌকিক পৃথিবী। আমরা প্রত্যেকে মনে মনে হয়তো এমন একটা পৃথিবীই চাই।
আপনাকে সেই পৃথিবীতে স্বাগত।
শফিকুর রহমান শান্তনু
আমি শফিকুর রহমান শান্তনু। মা সাহিদা রহমান, বাবা মােঃ শামসুর রহমান খান। কাস এইটে পড়ার সময় অংক পরীক্ষায় একবার ১০০ তে ১২ পেয়েছিলাম। সেই দুঃখে সারারাত জেগে একটা গল্প লিখে ফেললাম। এক কিশাের বাড়ি থেকে পালিয়ে রেলস্টেশনে ঘুরে বেড়াচ্ছে, এই হল গল্পের বিষয়। সেই থেকে শুরু। বাবা মা থেকে স্কুল শিক্ষক ও বন্ধুদের পিঠ চাপড়ে দেয়া লাই আমার এইম ইন লাইফ’ তৈরিতে সাহায্য করেছে। প্রেমের প্রস্তাব না পেলেও লেখার প্রস্তাব পেয়েছি কিছু তাই এনটিভিতে প্রচারিত ভালােবাসার উল্টো পিঠ, টার্মিনাল, সম্রাট, বাংলাভিশনের বাতিঘর, গপ্পো, পাল্টা হাওয়া, আরটিভির ধানশালিকের গাঁও, এটিএনবাংলার ছলে বলে কৌশলে, সােনার শেকল, বৈশাখীটিভির তখন হেমন্ত, একুশেটিভির থ্রি কমরেডস সহ টেলিভিশনের জন্যে প্রায় দুশাে নাটক, পত্রিকায় দুচারটা গল্প ও ব্যান্ডসঙ্গীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু, এসআই টুটুলসহ অনেকের গান লিখে আমি যখন লেখালেখিকে পেশা হিসেবে বেছে নিলাম, আমার বাবা ছাড়া পরিবারের কেউই বিষয়টাকে ভালাে চোখে নিল না! সেদিনই আমি প্রথম বুঝলাম, আজ কারাে চোখে যা ভালাে, কাল তারই চোখে তা খারাপ হতে পারে! শুনেছি, লেখক হলে বড় বড় কথা বলতে হয়। এখানেও আমি ধরা! বড় কথা বলতে গেলে সব কেমন যেন জট পাকিয়ে যায়। তখন মনে হয়, এই রাস্তা আমার নয়। আমার রাস্তার সংস্কার কাজ চলছে।