ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ চর্যাপদের পর ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ বাংলা ভাষার দ্বিতীয় প্রাচীনতম আবিষ্কৃত নিদর্শন। এই গ্রন্থের পথ ধরেই বাংলা সাহিত্যে বৈষ্ণব পদাবলির পথ সুগম হয়। এতে রাদা-কৃষ্ণের প্রেম কাহিনী মানবীয়বাবে প্রকাশ পেয়েছে। দৈব নির্দেশেই বালিকা বয়সে নপুংসক এর সঙ্গে বিয়ে হয় রাঁধার। বিবাহিতা রাঁধার রূপে-গুণে বিমুগ্ধ হয়েয়ই তাঁর প্রেমে মগ্ন হন কৃষ্ণ। রাঁধা বারবার প্রত্যাখ্যান করেন কৃষ্ণের প্রণয়-প্রস্তাব। এক সময় কৃষ্ণের নানা গুণে আকৃষ্ট হয় রাঁধা। মিলন হয় দুজনের । কিন্তু সেই কৃষ্ণই একসময় রাঁধাকে ঘুমন্ত রেখে কংসকে বধ করার জন্য মথুরাতে চলে যান। ঘুম থেকে উঠে কৃষ্ণকে না দেখে রাঁধা বিরহকাতর হন। কৃষ্ণ বিরহে রাঁধা জীবন্মৃত। সংবাদ পৌঁছে দেয় রাঁধার বাহক ‘উন্মাদিনীকে বাঁচাও কৃষ্ণ’। কিন্তু কৃষ্ণ আর বৃন্দাবনে ফিরে আসেন না । ‘আমি কলঙ্কিনী রাঁধা’ নামটি কতটুকু স্মরণ করিয়ে দিলেও এই কাব্যগ্রন্থে যাপিত জীবনের অংশ হিসেবেই রাঁধা কৃষ্ণের কথা উঠে এসেছে ভাবে..উপমায়..। প্রবাসের ব্যস্ত জীবনে কাব্যচর্চা এবং লেখা কঠিন কাজ বটে। আলো আহমেদ তা করেছেন। বাংলার মা, মাটি, ভাষা, সংস্কৃতিতে তাঁর শিকড়। তিনি এই চর্চার মাধ্যমে তাঁর ব্যক্তিগত অনুভূতি, ভালোলাগা-ভালোবাসা, স্বপ্ন-কল্পনা, সুখ-দুঃখ, বিরহ অত্যন্ত সহজ ভাষায় প্রকাশ পেয়েছে । হয়তো অনেক প্রেমিক হৃদয়ে অনুভূতি ছুঁয়ে যাবে তাঁর এই কাব্যগ্রন্থ। সত্যিকার অর্থেই এই লেখাগুলোতে একজন রাঁধাকে খুঁজে পাওয়া যাবে। সে প্রণয়ে কাতর ও বিরহে বিষণ্ন। ‘আমি কলঙ্কিনী রাঁধা’র মাধ্যমে তাঁর কাব্যময় পথচলা শুভ হোক।