পাখিরা ভালোবাসার পাগল। মানুষ যখন পাখিদের গভীর ভালোবেসে মানুষের কথা শেখাতে চায়, তখন তারা মানুষের ভাষা শেখার মতো দুরূহ কাজটি রপ্ত করে। তখন পাখিরা মানুষের মতো কথা বলতে পারে। পাখিরা কখনো মানুষকে ভালোবেসে নিজেরাই মানুষের ভাষায় কথা বলা শেখে। নিজের প্রিয় মানুষটিকে একদিন মানুষের ভাষায় কথা বলে চমকে দেয়। কিন্তু পাখির ভাষা জানা মানুষ বিরল। পাখি আর মানুষের এমন অনন্য সম্পর্কের নানা দিক নিয়ে রচিত হয়েছে ‘আমার পাখি কথা বলে’ গল্পগ্রন্থটি।
পাখি প্রকৃতির অলংকার। পাখি প্রকৃতির এক অবিচ্ছেদ্য সত্তা। শুভ্র নীল আকাশের গায়ে পাখি যেন ছুটন্ত নকশি ফুল। বন, মাঠ, জল ও আকাশে ছড়িয়ে থাকে পাখির সুখ-দুঃখের সবটুকুন আখ্যান। বিচিত্র রঙের পাখিরা সবুজ প্রকৃতিকে আরও রাঙিয়ে তুলে। পাখির বিচিত্র স্বরের গানে প্রকৃতির নীরবতার খাঁজে যেন সুখ সুন্দরের মণিমানিক্য জমে। সেই গানে মন ভরে যায়। বাহারি পাখি চোখ জুড়িয়ে দেয়। পাখির গানের সুরে বোঝা যায় পাখির হাসি, পাখির কান্না। পাখিদের নানান ঢঙের সুন্দর বাসা, নানা রঙের ডিম, আদুরে ছানা, আদুরে নামসহ পাখিদের সবকিছুই ভালোলাগার ঘোর লাগায়। পাখিদের আচার আচরণ, তাদের ঘর-সংসার, জীবন-যাপন, পরস্পরের সম্পর্কের গভীরতা, আনন্দ-বেদনা, সুখ-দুঃখ আমাদেরকে পাখি-জীবনের গভীরে প্রবেশের জন্য বারবার উৎসাহিত করে। পাখির জীবনের প্রতি বুকে গভীর টানের সৃষ্টি করে। সেই উৎসাহ আর বুকের টান থেকেই লেখক পাখি নিয়ে লিখেছেন এই গ্রন্থের গল্পগুলো। লেখকের বিশ্বাস, পাঠকের মনে গল্পগুলো পাখির সুরক্ষায় জনসচেতনতা সৃষ্টিতে, দেশপ্রেম ও পাখিপ্রেম জাগরণে নিশ্চিত ভূমিকা রাখবে। পাখির জন্য পাঠকের মনে অপার ভালোবাসার জন্ম দেবে। সে ভালোবাসায় পাঠক বাংলাদেশে অবাধে পাখি নিধন বন্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠবে।