‘ছেলেবেলা’ - সমাজতান্ত্রিক বাস্তবতামূলক সাহিত্যের জনক, বিশিষ্ট রুশ সোভিয়েত লেখক ম্যাক্সিম গোর্কির (১৮৬৮ - ১৯৩৬) ‘ছেলেবেলা’, ‘পৃথিবীর পথে’, ‘পৃথিবীর পাঠশালায়’ উপন্যাসত্রয়ীর প্রথম খন্ড।
গোর্কির এই উপন্যাসের পটভূমি উনবিংশ শতাব্দীর সত্তর-আশির দশক। উপন্যাসের নায়ক লেখক নিজে, বিষয়বস্তু বালক আলিওশার জীবনের সেই দুরূহ সময়কার ঘটনাবলী, যখন সে বাস করত তার কঠোর স্বভাবের দাদামশাইয়ের বাড়িতে। কাশিরিন-পরিবারের দৈনন্দিন জীবনের কাহিনী প্রসঙ্গে লেখক যে ‘বন্ধ ও শ্বাসরোধী’ পরিবেশের চিত্র এঁকেছেন তা তাঁর নিজের হৃদয়ে, স্মৃতিপটে অনপনেয় ছাপ রেখে দেয়। অল্প বয়সে পিতৃমাতৃহীন হওয়ার পর আলিওশা পেশকভ্ তার চারপাশে কেবল সংকীর্ণতা ও ক্ষুদ্রতারেই পরিচয় পায় নি। ভাবী লেখককে যাঁরা এই ‘কঠিন অথচ আকর্ষণীয় জীবনের পথে পরিচালনা করেন, তাঁদের সকলের চরিত্র- দিদিমা, ‘বাঃবেশ’, সিগানোক এবং আরও বহু ভালোমানুষের চরিত্র উপন্যাসে দরদের সঙ্গে চিত্রিত হয়েছে।
পরবর্তীকালে গোর্কি লেখক : ‘মুখ্যত আত্মজীবনীমূলক উপকরণ কাজে লাগিয়েছি বটে, কিন্তু নিজের চিত্র, জীবনের বিবরণকারীর চিত্র যাতে ক্ষুণ্ন না হয়, সেই উদ্দেশ্যে নিজেকে সক্রিয় ভূমিকায় স্থান না দিয়ে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রূপে উপস্থাপন করেছি।’
অধ্যাপক নজরুল ইসলাম
ম্যাক্সিম গোর্কি
আলেক্সেই ম্যাক্সিমোভিচ পেশকভ বা মাক্সিম গোর্কি (মার্চ ২৮, ১৮৬৮ – জুন ১৮, ১৯৩৬) বিখ্যাত রুশ সাহিত্যিক। তিনি নিজেই তাঁর সাহিত্যক ছদ্মনাম হিসেবে বেছে নেন 'গোর্কি' অর্থাৎ 'তেতো' নামকে। তাঁর অনেক বিখ্যাত রচনার মধ্যে মা একটি কালজয়ী উপন্যাস।
প্রথম জীবন মাক্সিম গোর্কি নিঞ্জি নভগরদ এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ৯ বছর বয়সে পিতৃমাতৃহীন হন। ১৮৮০ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি তার দাদীমাকে খুঁজতে গৃহ ত্যাগ করেন। ১৮৮৭ সালে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যান এবং দীর্ঘ ৫ বছর ধরে পায়ে হেঁটে সমগ্র রাশিয়া ভ্রমন করেন।
সাহিত্য রচনা ম্যাক্সিম গোর্কীর সর্বপ্রথম রচনা গণ 'মাকার চুদ্রা' ।