যে কোনো দেশের বা সমাজের মানুষদের নিজের দেশ বা সমাজের অতীত অবস্থা সম্পর্কে জানার আগ্রহ থাকা স্বাভাবিক। এই আগ্রহ থেকেই গড়ে উঠেছে ইতিহাসচর্চা। কিন্তু ইতিহাস কেবল অতীতের রাজা-রাজড়াদের রাজ্য জয় কিংবা শাসন-ক্ষমতা দখরের কাহিনী নয়। অতীতের অর্থনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক ইত্যাদি নানা বিষয় আজ ইতিহাসের অন্তর্ভুক্ত। তাই অতীতের সঙ্গে বর্তমানের বন্ধনের স্বরূপ যেমন ইতিহাসে ধরা পড়ে তেমনি তা প্রসারিত হয় বর্তমানকে অতিক্রম করে ভবিষ্যতের দিকেও। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা যে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন করেছি সে দেশটির ইতিহাসের পরিচয় তুলে ধরার জন্যই কথাসহিত্যিক সুব্রত বড়ুয়া লিখেছেন “আমাদের এই বাংলাদেশ”। এই ইতিহাসের কোন পাঠ্যপুস্তক নয়- সহজ, সরল ও অনাড়ম্বর গদ্যে রচিত এক অনন্য ইতিকাহিনী। এ বই জিজ্ঞাসু মানুষদের জন্য, সবার জন্য।
সুব্রত বড়ুয়া
সুব্রত বড়ুয়ার জন্ম বিগত শতকের চল্লিশের দশকের মাঝামাঝি সময়ে চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার অন্তর্গত ছিলােনীয়া গ্রামে এক মধ্যবিত্ত বৌদ্ধ পরিবারে। তার পিতার নাম অন্নদাচরণ বড়ুয়া ও মায়ের নাম সরােজিনী বড়ুয়া। নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার শিক্ষাজীবনের সূচনা; পরে চট্টগ্রাম শহরে এসে মিউনিসিপ্যাল মডেল হাই স্কুল থেকে ১৯৬১ সালে ম্যাট্রিক পাশ করেন। উচ্চমাধ্যমিক এবং স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ে পড়াশুনা করেন চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে। ১৯৬৬ সালে পদার্থবিজ্ঞানে অনার্সসহ বিএসসি এবং ১৯৬৭ সালে এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। চট্টগ্রাম কলেজে পড়ার সময়ই সাহিত্যের প্রতি তাঁর বিশেষ আগ্রহ জন্মে। সে সময় দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তাঁর কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। কর্মজীবন শুরু করেন চট্টগ্রাম শহরস্থ সেন্ট প্লাসিডস হাই স্কুলে বিজ্ঞান ও গণিতের শিক্ষক হিসেবে ১৯৬৯ সালে। সে বছরই ডিসেম্বর মাসে যােগ দেন রাঙ্গুনিয়া ডিগ্রি কলেজে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে। এক বছর পর ১৯৭০ সালের ডিসেম্বর মাসে যােগ দেন ঢাকাস্থ বাংলা একাডেমিতে। দীর্ঘ ৩২ বছর বাংলা একাডেমিতে চাকরি করার পর ২০০২ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি একাডেমির পরিচালক পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।