জ্যোতির্বিজ্ঞান ছোট একটি শব্দ হলেও এর বিশালতা সীমাহীন। সব বয়সের মানুষকে সমানভাবে আকর্ষণ করে মহাকাশের অনন্ত নক্ষত্রবীথি। একদম নীরস মানুষও নক্ষত্রের পানে চেয়ে থেকে হয়ে যান মন্ত্রমুগ্ধ। অবচেতন মনেই খুঁজতে শুরু করেন মহাবিশ্বের নানা রহস্যের উত্তর। তবে জ্যোতির্বিজ্ঞানের বিশালতার কারণে সেই কাজটি হয়ে ওঠে দুঃসাধ্য।
‘একটুখানি জ্যোতির্বিজ্ঞান’ বইয়ে পাঠকদের মহাবিশ্বের বিশালতা এবং রহস্যময়তার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে বেশ ভালোভাবেই। খালি চোখে বা টেলিস্কোপ ব্যবহার করে মহাবিশ্বকে জানা এবং বোঝার জন্য হাজার বছর ধরে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের প্রাণান্তকর প্রয়াস যেমন তুলে ধরা হয়েছে এখানে, তেমনি পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে একদল নারী জ্যোতির্বিদের সাথে। যাঁরা কিনা ইতিহাসের আড়ালেই রয়ে গেছেন অনেকটা সময়। অথচ সীমাহীন মহাবিশ্বের অগণিত নক্ষত্রকে একটি সুশৃঙ্খল বিন্যাসের মাধ্যমে প্রকাশ করার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো হয়েছিল তাঁদের হাত ধরেই। <br>
প্রথম দিকে জ্যোতির্বিদ্যাকে সবাই জ্যোতিষশাস্ত্রের অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করলেও সময় গড়ানোর সাথে সাথে আসে পরিবর্তন। পদার্থবিজ্ঞানের সাথে একীভূত হয়ে অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের আবির্ভাবে নতুন মাত্রা পায় জ্যোতির্বিজ্ঞান। অ্যাস্ট্রোফিজিক্সে আগ্রহীদের কথা মাথায় রেখে লেখক মূল বইয়ের বাইরে গিয়েও অনেক নতুন তথ্যের সমাবেশ করেছেন। প্রয়োগ করেছেন নিজের দৃষ্টিভঙ্গি। সব মিলিয়ে যেকোনো বয়সী জ্যোতির্বিজ্ঞানে আগ্রহীদের জন্যই তৈরি করা হয়েছে বইটিকে। পাশাপাশি মূল বইয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে হাজার বছরের জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ঘটনাগুলো ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপন করেছেন। এককথায় বলতে গেলে জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথম পাঠ হিসেবে নিশ্চয়ই বইটি পাঠককে এক বিন্দু হতাশ করবে না বলেই আমাদের বিশ্বাস।