ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ একাক্তর ছিল আমাদের আত্মপরিচয়ের বছর।লেবুটা দেখতে কীরকম সেটা বড় কথা নয়। লেবুটা চিপলে রসটা কীরকম সেটাই বড় কথা। স্বাভাবিক সময়ে আমাদের আচরণ একরকম।আসল পরিচয়-হচ্ছে তাদের ক্রান্তিকালের আচরণ। একাত্তরের সমাজ ছিল রক্ষণশীল।নারী এবং পুরুষের মধ্যে ব্যবধান ছিল ব্যাপক।মুক্তিযুদ্ধে সেই ব্যাপক অনেকটাই ঘুচিয়ে দেয়।তখনই আবিষ্কার করা হয় অন্তপুরের রমণীদের দেশপ্রেম পুরুষদের চেয়ে কোনোঅংশেই কম নয় তাদের ত্যাগ, শ্রুম ও নিষ্ঠা পুরুষদের চেয়ে ঢের বেশি। একাত্তর একইধারে নিজেদের আবিষ্কারের বছর।আমাদের রমণীকুলের ওদার্য, মহানুভবতা ও কষ্ট সহিষ্ণু সবাদানের পরিচয় পাই আমরা একাত্তরে। এর জন্য কোন ময়নাতদন্ত করতে হয়নি। তারাই ত্যাগ স্বীকার করেছে সবচেয়ে বেশি।আপাত বাহ্যিক না হলেও তাদের শ্রমদাও পুরুষদের চেয়ে এগিয়ে। আমাদের নারীকূলের সেই ত্যাগের কথাই প্রতীকভাবে হলেও বিশদভাবে ওঠে এসেছে মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়ার কলমে তার একাত্তরের কন্যা, জায়া, জননীরা গ্রন্থে। বইয়ের চরিত্রদের তিনি চিত্রায়িত করেছেন অতলষ্পর্শী মমতায়।
মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া
মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া ২৪ জুলাই ১৯৫২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। যখন তিনি ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন, তখন মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের ২ নম্বর সেক্টরের তরুণ গণযোদ্ধা হিসেবে কাজ করেন। মুক্তিযুদ্ধের কিংবদন্তি মেজর খালেদ মোশাররফ ও ক্যাপ্টেন হায়দারের সহযোদ্ধা হিসেবে তাঁর অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ১৯৭৪ সালের ৯ জানুয়ারি যোগদান করে ১৯৭৫ সালের ১১ জানুয়ারি ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কমিশনপ্রাপ্ত হন। ১৯৮৩ সালে বেইজিং ল্যাংগুয়েজ এন্ড কালচার ইউনিভার্সিটি থেকে চীনা ভাষায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১৯৯৬ সালের ১২ জুলাই সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন। মুক্তিযুদ্ধ এবং একমাত্র পুত্র সাবিতের মৃত্যুর যন্ত্রণা সত্ত্বেও, তিনি সবুজ ও উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন।