ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ আনিস রহমান । গল্পকার। প্রাত্যহিক জীবনের বিচিত্র সংকট আর সম্ভাবনার এক গোপন অধ্যায় নিয়ে তাঁর গল্পের জগৎ এক আনন্দিত সমগ্রতা লাভ করে। কিন্তু শিশু-কিশোরদের জন্য রচিত গল্পে তিনি ভিন্ন এক জীবন তৃষ্ণা জাগিয়ে তোলেন। যৌক্তিকতা, অযোক্তিকতা, রোমাঞ্চ আর কৌতূহলের যে বিপুলায়তন জিজ্ঞাসা নিয়ে শৈশব-কৈশোরের আনন্দিত জীবন রচিত হয় আনিস রহমান সেই জীবনের এক অনুপুঙ্খ শিল্প ভাষ্য রচনায় ঈর্ষণীয় প্রতিভার পরিচয় রাখেন। এমন এক সহজাত শক্কিতে তিনি শিশু-কিশোরদের কৌতূহল ও কল্পনার জগৎটাকে ধরতে চেষ্টা করেন যেখানে প্রতিটি চরিত্র স্বতন্ত্র সৌন্দর্যে মহিমামন্ডিত হয়ে ওঠে। তাঁর গল্পগুলো পাঠ করলে এই জগতের বৈচিত্র্য, বিপুলতা ও বিস্ময়কর রহস্যময়তার সৌন্দর্য অনুভব করা যায়। আনিস রহমান প্রেমিক মানুষ। তাঁর এই প্রেমেবোধ ভিন্ন এক মাত্রা লাভ করে শৈশব-জীবন ও প্রকৃতিকে কেন্দ্র করে। ফলে প্রকৃতি-কেন্দ্রিক শৈশব আর প্রকৃতি-বিচ্ছিন্ন শৈশবের দ্বৈরথ তাঁর গল্পগুলোকে ভিন্ন মাত্রা দেয়। গভীর এক মমত্ববোধ থেকে তিনি শৈশবের আনন্দ-বেদনার তাৎপর্যপূর্ণ আলেখ্য গল্পগুলোকে ঐশ্বর্যমণ্ডিত করে তুলেছেন। এ যেন শৈশব ফিরে দেখা নায়-ফিরে যাওয়া।
আনিস রহমান
আনিস রহমান-এর জন্ম ২০ জানুয়ারি ১৯৬৪ ঢাকায়। গ্রাম গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ। তিনি গল্প লিখছেন মধ্য-আশি থেকে। যাপিত জীবনের ব্যক্তিক ও সামাজিক অভিজ্ঞতার সংবেদনশীল রূপায়নের জন্যে তিনি প্রথম থেকেই চিহ্নিত হয়েছেন ব্যতিক্রমী একজন গল্প লেখক হিসেবে। নদীর রূপপালী ধারা, বাঁক ফেরা তাকে মগ্ন করে, মুগ্ধ করে গভীর চেতনায় । তাই ফিরে ফিরে নদীর কাছে যাওয়া তার অনন্য এক শখ। দীর্ঘ প্রায় এক দশক যুক্ত ছিলেন সাংবাদিকতায়। সে সুবাদে জীবনের নানা অবয়ব কখনও তাকে করেছে আশাহত কখনও আর্দ্র। কখনও আবার স্বপ্ন দেখিয়েছে নতুন আগামীর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগােলে সম্মানসহ স্নাতকোত্তর । পিএইচ.ডি করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বর্তমানে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত। সংসারবন্ধু আশরাফ জঁহা এলি। শিক্ষকতা করেন একটি কলেজে। মেয়ে নিসর্গ মেঘেলা। ছেলে দিঘল অরণ্য কাব্য। প্রকাশিত গ্রন্থ : ছােটগল্প। ছেড়া পাঁজরের চিরকুট, ছায়া জুড়ে বিষন্নতা, বাজে না মন্দিরা, ঈশ্বরের চিত্রনাট্য, মণ্ডপটিলার পার্শ্বচিত্র, তুলির ডগায় রঙ, আকাশ কাকুর চিঠি, হৃদয়পুর, গ্রেট দিপকদা, আঁকাজোকা মুখ, ভূত-অদ্ভুত। প্রবন্ধ : বাংলাদেশের উপন্যাসে ভূগােল-চেতনা (১৯৪৭-১৯৯০), কাল-সমকাল ।