আল্লাহ তায়ালা ইলম ছাড়া দ্বীনি বিষয়ে মুখ খোলাকে শয়তানের পক্ষ থেকে সাজানো অপকর্ম হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “শয়তান তোমাদেরকে অকল্যাণ ও অশ্লীলতার আর আল্লাহর ব্যাপারে এমন কিছু বলার নির্দেশ দেয়, যা তোমরা জানো না।” ( সূরা বাকারা- ১৬৯)
আসলে সমস্ত বিদয়াত এবং ভ্রান্তির পথে এই বিষয়টিই মূল। বর্তমানে বিভিন্ন পুস্তিকা, ম্যাগাজিন ও পত্রিকায় এমন অনেক কিছুই লেখা হয়।মুসলমানদের এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিৎ।
আপনি এমন অনেক ব্যক্তিকেও দেখবেন যাদের দ্বীন সম্পর্কে কোন জ্ঞান নেই। অথচ তারা বিভিন্ন বিষয়ে শর’য়ী ফায়সালা প্রদান করে বেড়াচ্ছে। শর’য়ী জ্ঞানহীন এমন অনেক লেখক ও কথিত বুদ্ধিজীবী আছে, যারা জায়গায় জায়গায় বলে বেড়ায়, ”এটা শরীয়তের বিধান না! শরীয়তে এর কোন স্থান নেই!আরো কত কথা….! ”
আল্লাহর কাছেই আশ্রয় প্রার্থনা করি। মুসলমানদের দায়িত্ব হচ্ছে, এদের ব্যপারে নিজে সতর্ক হওয়া এবং অন্যকে সতর্ক করা। সেসব আহলে ইলম থেকেই দ্বীনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যারা আমানতদার এবং বিশুদ্ধ দলিলের আলোকে ফায়সালা প্রদান করেন’
‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূল থেকে আগে বেড়ে না যাওয়া এটা দাবি করে যে, শরীয়তের দলীলসমূহের ধারাবাহিক পর্যায় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা জরুরী। যেন কোন নিম্ন ও দুর্বল দলীলকে উচ্চ ও মজবুত দলীলের উপর প্রাধান্য দেয়া না হয়। এটি সম্পূর্ণ হারাম। কারণ এর মাধ্যমে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আগে বেড়ে যাওয়া হয়। এ জন্যই উলামায়ে কেরাম বলেন, নস এবং শর’য়ী দলিলের সাথে কোন ইজতিহাদ নেই।
শায়খ আব্দুল ওয়াহহাব রাহিঃ বলেন, দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর এটাই প্রমাণিত যে, শরয়ী দলীল যার থেকে হুকুম আহরণ করা হয় তা মূলত ৪ প্রকার। কুর’আন, সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াস। এই চার উৎসের মাধ্যমে দলীল প্রদানের ব্যাপারে জমহুর আইম্মায়ে কেরাম এবং মুসলমানদের ইজমা রয়েছে। তারা এ ব্যাপারেও একমত পোষণ করেছেন, এই চারটি উৎস উল্লেখিত ধারাবাহিকতার ভিত্তিতে কার্যত হবে। প্রথমে কুর’আন, এরপর সুন্নাহ, এরপর ইজমা, এরপর কিয়াস। অর্থাৎ যখন কোন বিষয় সামনে আসবে তখন সর্বপ্রথম কুর’আনে দেখতে হবে। যদি কুর’আনে এর হুকুম পাওয়া যায় তাহলে সেটাই কার্যত হবে। আর না পাওয়া গেলে সুন্নতে দেখতে হবে। সেখানে হুকুম পাওয়া গেলে সেই হুকুম কার্যত হবে। সুন্নাতেও না পাওয়া গেলে দেখতে হবে পূর্ববর্তী যুগের মুজতাহিদরা উক্ত বিষয়ে কোন হুকুমের উপর ঐক্যমত পোষণ করেছিলেন কিনা। যদি তাদের ইজমা (ঐক্যমত) পাওয়া যায়, তাহলে সেটিই কার্যত হবে। আর না পাওয়া গেলে এর হুকুম পর্যন্ত পৌঁছতে ইজতেহাদ করবে সমজাতীয় এমন কোন বিষয়ের উপর কিয়াসের ( তুলনার)ভিত্তিতে, যার ব্যাপারে নস ( আয়াত-হাদীস) বিদ্যমান’