নিতান্ত গ্রাম্য কিশাের থেকে বেড়ে ওঠা তরুণ নিতাই চান। সরল, প্রাকৃত-অতিপ্রাকৃত ঘটনাবহুল সময়ের সাক্ষী সে। নানান সংস্কার, গ্রামীণ ও ধর্মীয় মিথ, স্বদেশ ও বৈশ্বিক রাজনীতি, যুদ্ধ-বিগ্রহের অভিজ্ঞতা গ্রামের সহজসরল কৈশােরােত্তীর্ণ তরুণকে ঠেলে দেয়। অতল খাদে। মঙ্গল রাষ্ট্রের খোঁজ করতে গিয়ে নিতাই আবিষ্কার করে আরাে জটিল এবং বুর্জোয়া এক বিশ্ব। গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, পুঁজিবাদ, রাজতন্ত্র এসব কোনাে তন্ত্রই নিজস্ব অবস্থানে নেই। সােভিয়েত ভেঙে পনেরাে টুকরাে হওয়ার ঘটনা থেকে জেনে যায় সমাজতন্ত্র বা কমিউনিজম নিজস্ব অবস্থান থেকে যােজন দূরে। গণতন্ত্রের নিজস্ব কোনাে শক্তি নেই, সে পুঁজিবাদ চালিত! কৈশােরে যে রাজনৈতিক ভাবনার উচ্ছলতা নিয়ে নিতাই বেড়ে উঠেছিল, তারুণ্যে এসে সে জেনে যায়। বাস্তবতার সাথে তাত্ত্বিক ভাবনার মাঝে যােজন দূরত্ব। উপন্যাসের কাহিনি এগিয়েছে নতুন রাজনীতির সন্ধানে। এক গ্রাম্য কিশাের কীভাবে এই বৈশ্বিক রাজনীতির অংশ হয়ে যায় এবং শেষ পরিণতিতে সিআইএ-এর লক্ষ্যে পরিণত হয় তাই বিধৃত হয়েছে এ উপন্যাসে। জাদুবাস্তবতা, রূপক এবং জটিল দর্শন চিন্তার অশ্ববেগি এক উপন্যাস অগ্নি সারসেরা।
মিলটন রহমান
মিলটন রহমান, কবি, গবেষক, কথাসাহিত্যিক এবং সাংবাদিক। দেশে এবং লন্ডনে ভাগাভাগি বসবাস। ২০০৭ সালে উচ্চ শিক্ষায় ইংল্যান্ডে গিয়ে সাহিত্য চর্চায় যােগ করেছেন বৈশ্বিক চরিত্র। তবে তাঁর রচনায় স্বদেশ এবং তামাটে বর্ণের মানুষ কখনাে হারিয়ে যায়নি। চট্টগ্রামের সীতাকণ্ড থানার হাজিপাড়ায় (সাবেক হাজারী তালুক) জন্ম নেয়া প্রকৃতির এ সন্তান বেড়ে উঠেছেন চন্দ্রনাথ পাহাড়ের পাদদেশে। শৈশবে চোখে সবুজ ধারণ করেই বেরিয়ে পড়েন নানান দিগন্তে। চট্টগ্রাম এবং ঢাকায় বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে সাংবাদিকতা করেছেন। সেই সাথে মৌলিক রচনায় তাঁকে দেখা গেছে ধ্রুবতারার মতাে। লন্ডনে গিয়ে সাংবাদিকতায় আত্মনিয়ােগ করলেও পাঠকের কাছে সমাদৃত হয়ে থাকেন মৌলিক রচনার জন্যই । ফলে তাঁর সাংবাদিক পরিচয়টি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি মৌলিক মিলটন রহমানের কাছে। পিতা ডাক্তার একেএম ওয়াহীদি আর মা নূরজাহান বেগম। গ্রামের মাটিতে শৈশব কাটানাে এই লেখকের করণকৌশলে পাওয়া যায় বহুমাত্রিক প্রবাহ। প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে-শ্লেড্রপ চুম্বনেরা। (কবিতা, ২০১৮), কবি শহীদ কাদরী ও অন্যান্য প্রবন্ধ (প্রবন্ধ, ২০১৭), নকশাপূরাণ (ছােটগল্প, ২০১৫), নিষঙ্গ (কবিতা, ২০১২) চূর্ণকাল (কবিতা, ২০১০), ব্রুটাস পর্ব এবং কর্তার শারীরিক অবনতি (ছােটগল্প, ২০০২)।