‘আবৃত্তির ক্লাস’ ভূমিকা বিষয়, ভাব-রস, ছন্দ, অলংকার, যতি ইত্যাদি ঠিক রেখে সঠিক উচ্চারণে গদ্য-কবিতার প্রাণময় প্রকাশই আবৃত্তি। শুদ্ধভাষার প্রয়োগ, আকর্ষণীয় উপস্থাপন, কণ্ঠের কৌশলগত উৎকর্ষতা, দৃঢ় মনোবল, ধীর গতি, মুখস্থাভ্যাস, গভীর মনোযোগ, দীর্ঘদম, স্বরক্ষেপণ ও শ্বাসপ্রশ্বাসের সঠিক নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেই আবৃত্তি প্ৰাণ পায়। আবৃত্তি অনেক পুরাতন শিল্প হলেও বর্তমানেও এটি কম জনপ্রিয় নয়। শুধু কথাবার্তা নয় বক্তৃতা, ঘোষণা, সংবাদপাঠ, অভিনয়-সবকিছুতেই আবৃত্তির ভাব ফুঠে ওঠে। আবৃত্তির জন্য কী লাগে? আবৃত্তির সাধারণ জ্ঞান থাকা, আবৃত্তির উপাদানগুলো জানা, শুদ্ধ উচ্চারণ, বিরতি, রস, ছন্দ, অলংকার এবং গদ্য বা কবিতায় উপস্থাপিত মূল বিষয়টি ধরা। এগলোর সহজ উপস্থাপন দেখতে পাই হাসান রাউফুন রচিত ‘আবৃত্তির ক্লাস’ গ্রন্থে। লেখক এসব বিষয় চমৎকারভাবে উপস্থাপন করেছেন। তিনি আবৃত্তির বিষয়গুলো দুটি অধ্যায়ে ভাগ করে সহজ-সরলভাবে উপস্থাপনের কৌশল অবলম্বন করেছেন যা শিক্ষার্থীরা সহজেই মনোনিবেশ করতে পারবে। একজন আবৃত্তি-শিক্ষার্থীকে কী কী বিষয় জানা দরকার সেগুলো তিনি প্রথম অধ্যায়ে সহজ বাক্যে উপস্থাপন করেছে। তবে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য অধ্যায় হলো দ্বিতীয় অধ্যায়। আবৃত্তির থিয়রিক্যাল বিষয়ের চেয়ে যে প্র্যাকটিক্যালের জোর বেশি সেটি তিনি এই অধ্যায়ে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। প্রতিটি গদ্য-কবিতার বিষয়-রাস, কণ্ঠের ওঠানামা, কষ্ঠের স্কেল, চরিত্র, চরিত্রগুলোর সংলাপ, শব্দ-উচ্চারণ এবং উপস্থাপনের নির্দেশনা প্ৰদান একটি অভিনব দিক। এখানে একজন শিক্ষার্থী হাতেকলমে আবৃত্তি শিখতে পারবে, বলে আশা রাখি। বাজারে শিশুদের জন্য যেসব আবৃত্তির গ্রন্থ রয়েছে সেখানে ছাড়া বা কবিতার স্থান বেশি দেখা যায় কিন্তু লেখক হাসান রাউফুন ‘আবৃত্তির ক্লাস’ গ্রন্থে ছড়াকবিতার পাশাপাশি গল্প, প্ৰবন্ধ, চিঠিরও স্থান দিয়েছেন যেগুলো শিশুদের মজা দেবে। আমি গ্রন্থটির সফলতা কামনা করি। আয়েশা হক শিমু। সূচিক্রমঃ প্রথম অধ্যায়: আবৃত্তিতত্ত্ব ০৯-৬২ পাঠ ১ : আবৃত্তি, আবৃত্তিকারের সাধারণ জ্ঞান পাঠ ২ : আবৃত্তির উপাদান পাঠ ৩ : শুদ্ধ উচ্চারণ পাঠ ৪ : বিরতি পাঠ ৫ : রস পাঠ ৬ : ছন্দ পাঠ ৭ : অলংকার দ্বিতীয় অধ্যায়: আবৃত্তির ক্লাস ৬৩-৮০ পাঠ ১ : গল্প, প্ৰবন্ধ, চিঠি পাঠ ২ : ছড়াকবিতা