এবং হিমু
বইবাজার মূল্য : ৳ ১৪৪ (২০% ছাড়ে)
মুদ্রিত মূল্য : ৳ ১৮০
প্রকাশনী : সময় প্রকাশন
বিষয় : সমকালীন-উপন্যাস , হুমায়ুন মেলা
হিমুর কাজই হলো রাতে ঘুরা-ঘুরি করা।তার কাছে রাত একটা কোনো সময়ই না।সে রাস্তায় হাটা-হাটি করছে তার খিদা লাগায় সে ঠিক করে সে ফুপাদের বাসায় গিয়ে ভাত খেতে চাইবে দিলে ভালো না দিলেও কোনো সমস্যা নাই।তাকে রাস্তায় পুলিশে থামায়।তাকে একজন থাপ্পড় দেয় তার পরও হিমু তাদেরকে অনুকরণ করে তাদের পিছে পিছে আসতে থাকে।পুলিশরা হিমুকে ভয় পাওয়া শুরু করে যদিও তাদের কাছে রাইফেল রয়েছে তাও কেন যেন তারা হিমুকে ভয় পেতে শুরু করেছে।তাদের পিছনে যেতে হিমুর অনেক মজা লাগছে।সে এরকম করতে করতে ফুপার বাসায় চলে আসে।সেখানে গিয়ে দেখে বাতি ঝলছে।হিমু ভাবলো তার মনে হয় আজকে আর ভাত খাওয়া হবে না সে কলিংবেল দেয়াও গেট খুলে তার ফুপা।কিন্তু আজকে হিমু অবাক হয়ে দেখলো যে আজকে সে আসায় সবাই অনেক খুশি।সেখানে গিয়ে জানতে পারে যে বাদলের গলায় কাটা ঢুকার কারনে বাদলের অনেক খারাপ অবস্থা।সে ৩দিন যাবত কিছু খেতে পারতেছে না।অনেক ডাক্তার দেখানোর ফলেও কোনো লাভ হয়নি।বাদলের ধারণা হিমু পারবে তাই হিমুকে খুজতেছে ফুপা-ফুপু।সেখানে গিয়ে সে ইরাকে দেখে।ইরা,হিমুর ফুপার বন্ধুর মেয়ে।ইরা,হিমুর কাজে অনেক বিরক্ত হয়।সে হিমুকে বলে বাদল যেন বলে তার সব কাজই ভুয়া।এর মধ্যে বদরুল সাহেবের চাকরি চলে যায়।সে হিমুর সাথে আড্ডা দেয় এবং এক বন্ধুর পিছনে ঘুরে চাকরির জন্য।তার ধারনা তার বন্ধু তার একটা চাকরির ব্যবস্থা ঠিকই করবে।যদিও হিমুর মনে হয় না।এর মাঝে ইরা আসে হিমুর কাছে।হিমু অবাক হয় যে ইরা তার ঠিকানা কিভাবে পেয়েছে এ বাসার ঠিকানা সে বাসার কেউই জানে না।হিমুর সাথে রেশমা খালার দেখা হয়।রেশমা খালা একা মানুষ।স্বামী মারা গিয়েছে।তাই সে একাই থাকে যদিও বাবুর্চি,আর অল্প কিছু লোক রয়েছে তাও সে হিমুকে তার সাথে থাকতে বলে,হাতখরচও দিবে বলে।হিমু সেখানে চলে যায় থাকার জন্য।সেখানে সে ভালোই দিন কাটানো শুরু করে।সেখানে গিয়ে সে জানতে পারে যে রেশমা খালা নাকি তার স্বামীকে রাতের বেলা দেখে ফলে সে নাকি ঘুমাতে পারে না।এর কারন হিমু ব্যাখা করেছে যদিও মিথ্যা কথা বলেছে হিমু কিন্তু তার মধ্যে একটা সত্যি কথা ছিল তা হলো রেশমা খালাই তার স্বামীকে হত্যা করেছে।তার উপর রেশমা খালা অনেক রেগে যায়।তাকে বাসা থেকে বের করে দেয়।ইরার সাথে হিমুর রাস্তায় দেখা হয়।হিমু ইরাকে অনেক জালাই।এদিকে বদরুল সাহেবের চাকরি নাই তা তার পরিবার জেনে যায়।তার বউ অনেক অসুস্থ হয়ে যায়।অথচ বদরুল সাহেবের বন্ধু তাকে চাকরির ব্যবস্থা করে না।বাদল এদিকে জামা কাপড় খুলে নগ্ন হয়ে ধ্যান করা শুরু করে ফলে হিমুর ফুপা-ফুপু হিমুর উপর রেগে থাকে তাদের ধারণা এর কারন হলো হিমুর মতো মহাপুরুষ বাদলও হতে চায়।হিমু সেখানে গিয়ে সে সমস্যা সমাধান করে।হিমু রুপাকে ফোন দেয়।দিয়ে বদরুল সাহেবের জন্য একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য।রুপা হিমুর কথা রাখে।সে ভালো একটা চাকরির ব্যবস্থা করে ফেলে।সে চাকরির লেটার নিয়ে হিমু অপেক্ষা করে হাসপাতালে।কারন বদরুল সাহেব অনেক অসুস্থ হয়ে পরে যার ফলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো লাগে।সেখানে হিমু সে লেটারটা ডাক্তারকে দিয়ে বলে বদরুল সাহেবের জ্ঞান ফিরলে যেন তাকে সে লেটারটা দেয় নাহলে ছিড়ে ফেলে।হিমু এই বলে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যায়।তার সাথে সাথে ইরাও বের হয় সেও হিমুর সাথে রাতে হাটতে চায় এবং হিমুর হাত ধরতে চায়।গল্পটা আসলেই অনেক ভালো লেগেছে আমার কাছে।এই গল্পটা পড়লে বুঝা যায়যে হিমু সম্পূর্ন মহাপুরুষ হতে পারে নি।কারন হিমুর মাঝেও মায়া রয়েছে অথচ তার বাবার মতে মহাপুরুষদের কোনো মায়া থাকবে না।রুপার কাহিনিও ভালো লেগেছে।হিমু তার কাছে যখন যা চায় রুপা তাকে তাই দিয়েছে তা এই গল্পে খুব ভালো করে বুঝা গিয়েছে।ইরার কাহিনিও ভালো লেগেছে।সে উপরে উপরে হিমুর উপর রাগ বুঝালেও সে ভিতরে ভিতরে হিমুকে অনেক পছন্দ করে।বদরুল সাহেবের কাহিনিও মজাদার ছিল।সে সহজ-সরল এবং কিছুটা বোকা ধরনের মানুষ।গল্পটা পড়ে আসলেই অনেক মজা পেয়েছি।বইটি সবার পড়ার উপযোগী।সবাই পরে দেখতে পারেন।সবার ভালো লাগবে আমার বিশ্বাস। #বইবাজার_রিভিউ_প্রতিযোগীতা_মার্চ_২০১৯
হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টিকর্মগুলোর মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে কঠিন মনে হয় হিমু সিরিজের বইগুলোর রিভিউ লেখা। সে হিসেবে আমার জন্য এটি একটি কঠিন কাজ বটে। তবে যেহেতু এটি একটি প্রিয় বই তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি রিভিউ লেখার জন্য! হিমুকে কয়েকদিন ধরে গরু খোঁজার মতো খোঁজা হচ্ছে। না তা গরু খুজেঁ দেওয়ার জন্য না। সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু বাদল! কিভাবে যেন মাছ খেতে গিয়ে গলায় কাঁটা বেঁধিয়ে বসে আছে। কয়েকদিন ধরে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ! এমনকি ঢোক পর্যন্ত গিলতে পারছে না। অনেক ডাক্তার দেখানো হয়েছে। কেউ কিছু করতে পারেনি। কিন্তু বাদলের বিশ্বাস এই কাজ হিমু ভাই ছাড়া আর কেউ করতে পারবে না। সেজন্যই হিমুকে গরু খোঁজা খোঁজা হচ্ছে… এক রাতে হাঁটতে হাঁটতে খিদে লাগায় হিমু হাজির হয় মাজেদা খালার বাসায়! সে রাতে খাবার সময় নেমে যায় বাদলের গলার কাঁটা। হিমু হয়ে যায় খালা খালুর প্রিয়পাত্র। সবাই মনে করে আধ্মাত্বিক ক্ষমতার দ্বারা হিমু বাদলের কাঁটা নামিয়ে দিয়েছে। শুধু একজন বাদে… সে হচ্ছে ইরা! ইরা! বাদলদের দূরসম্পর্কের আত্মীয়। সামনে পরীক্ষা তাই বিশেষ একটা কারণে তাকে এখানে থেকে পড়াশোনা করতে ইচ্ছে। ইরা কখনোই হিমুকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেনি! তার মনে হতে থাকে এসব বুজরকি শুধুমাত্র মানুষকে ঠকানোর জন্য। বাদলের কাঁটা নামিয়ে চলে আসার পর ইরার সাথে হিমুর কয়েকবার দেখা হয়! বাদলের সন্ন্যাসব্রত যেন তাদের দেখা করার উপায় ছিলো মাত্র! এ গল্পে হিমু, ইরা, বাদল, মাজেদা খালা, খালু বাদেও আরো কয়েকটি চরিত্র রয়েছে। এরমধ্যে প্রধান দুটি চরিত্র হলো, রেশমা খালা আর বদরুল সাহেব। বদরুল সাহেব এই গল্পের অন্যতম প্রধান চরিত্র। অত্যন্ত দুঃখী অথচ গোবেচারা ধরনের মানুষ নিতান্তই খেয়ালবশত হিমুকে প্রচন্ড পছন্দ করেন… এছাড়া রয়েছেন রেশমা খালা! স্বামীর মৃত্যুর পর যিনি রাতে ঘুমের সময় স্বামীকে প্রতিরাতে বাসায় দেখতে পান এবং এই সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি হিমুকে তার কাছে নিয়ে আসেন! এ গল্পে রেশমা খালা না থাকলে নিঃসন্দেহে গল্পটি সাদামাটা রূপ ধারণ করতো। এবং হিমু বইটি হিমু সিরিজের আমার পড়া অন্যতম সেরা এবং পছন্দনীয় বই। আমার এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার পড়া হয়েছে! এখনও মাঝে মাঝে পড়ি। বিশেষ করে শেষের দিকে ইরা আর হিমুর মধ্যকার কথোপকথন এক ধরনের অন্যরকম শিহরনের জন্ম দেয়। আর রূপা চরিত্রটি… যেন প্রতিটি গল্পেই নিজের মতো! পছন্দনীয় অথচ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য! #বইবাজার_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_মার্চ_২০১৯