খুলাফায়ে রাশেদার পরবর্তী যুগে মুসলিম উম্মাহকে গুরুতর কিছু ফিতনার সম্মুখীন হতে হয়েছে এবং তারা সেটা মোকাবেলাও করেছে।
উমাইয়া যুগে 'খলিফার মানদণ্ডে মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানেরা কতটুকু উত্তীর্ণ!' এমন প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল। শূরা পদ্ধতিকে উপেক্ষা করে পৈত্রিক সূত্র ধরে খিলাফতের দায়িত্ব বণ্টন হচ্ছে কি-না এমন আপত্তিও উঠেছিল। এসব প্রশ্নের যথাযথ উত্তর না থাকায় ফিতনা আরো বড় আকার ধারণ করে। কিছু খলিফা বাইয়াত গ্রহণে এমন স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠেছিলেন, যাদের জুলুম থেকে যুগশ্রেষ্ঠ সাহাবি ও তাবেয়ীগণও রেহাই পাননি।
খিলাফাহ ব্যবস্থা পরিপূর্ণভাবে নববী মানহাজে ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে যুক্ত ছিলেন আমিরুল মুমিনিন আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের। ফলে ক্ষমতাসীনদের জন্য তিনি হুমকির কারণ হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালিয়েও তাকে দমানো যায়নি।
ইতিহাসের এই অধ্যায় নিয়ে বেশ ধোঁয়াশা আছে। ইবনে যুবায়েরের সংগ্রামকে বৈধতা দিতে গিয়ে অনেকে উমাইয়াদের ঈমান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ আবার উমাইয়াদের বিরোধিতাকে বৈধ আখ্যা দিয়ে ইবনে যুবায়েরের খিলাফতকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।
এমতাবস্থায় ড. আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবি এই সংকলনের মাধ্যমে নির্ভরযোগ্য সূত্রে ও সততার সাথে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের প্রকৃত অবস্থান তুলে ধরেছেন। বইটি পড়ে— প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রকাঠামোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে ইবনে যুবায়ের কতটা সুদূরপ্রসারী কৌশল অবলম্বন করেছেন এবং অস্থিতিশীল রাজনীতিকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে কতটা বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন তা জানা যাবে। তাছাড়া লেখক ব্যাপক গবেষণা ও সুচিন্তিত মতামতের মাধ্যমে তার সংগ্রামের সফলতা ও ব্যর্থতার কারণসমূহ বর্ণনা করেছেন। ইতিহাস পাঠের মাধ্যমে যারা শিক্ষা গ্রহণ করতে আগ্রহী, এই রচনাটি তাদের জন্য মূল্যবান খোরাক হবে বলে আশাবাদী।
ড. আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবি
ড. আলী মুহাম্মাদ সাল্লাবী ১৯৬৩ সালে লিবিয়ার বেনগাযি শহরে জন্মগ্রহণ করেন। মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উসুল আদ-দ্বীন বিভাগ এবং দাওয়া বিভাগ থেকে ব্যাচেলরস অব আর্টসে ডিগ্রি লাভ করেন। পরে ১৯৯৬ সালে উসুল আদ-দ্বীন বিভাগ থেকে তাফসীর, উলুমুল কুরআন বিষয়ে মাস্টার ডিগ্রিপ্রাপ্ত হন। তিনি ১৯৯৯ সালে উম্মে দুরমান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সুদান থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন |
তিনি বর্তমান বিশ্বের একজন বিখ্যাত ও প্রসিদ্ধ সীরাত লেখক। তার লিখিত খুলাফায়ে রাশেদীন। এবং সালাহউদ্দিন রহ.-এর জীবনী ইংরেজিতে অনূদিত হয়ে ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক পাবলিসিং হাউস (IIPH) থেকে ছাপানাে হয়েছে। কিতাবগুলাের বাংলা অনুবাদ ছাপানাের ব্যাপারে IIPH-এর সঙ্গে মাকতাবাতুল ফুরকান চুক্তিবদ্ধ । শীঘই সবগুলাে কিতাব এদেশের পাঠকের নিকট পৌছবে, ইনশাআল্লাহ।