সে এক বিষন্ন সুন্দর তরুণ, জীবনযাপন ক'রে যাচ্ছে সে; কিন্তু সে প'ড়ে আছে তার সবচেয়ে সুন্দর, সবচেয়ে মধুর, সবচেয়ে মহান স্মৃতির মধ্যে। আব্বুকে তার মনে পড়ে এবং মনে পড়ে না। মনে পড়ে না ব'লেই আব্বুকে তার বেশি মনে পড়ে। একটি মহাযুদ্ধ এসেছিল তার জীবনে। সবার জীবনে। ওই মহাযুদ্ধের নাম মুক্তিযুদ্ধ। তার সুন্দর মধুর কবিতায় ভরা আব্বু গিয়েছিল সেই মহাযুদ্ধে। আর ফেরেনি। তারপর সকলের জীবন ভ'রে উঠেছে স্বাধীনতায়; কিন্তু তার জীবন ভরেনি আব্বু ফেরেনি ব'লে। মুক্তিযুদ্ধের সময় যে ছিল শিশু, এই উপন্যাসে সে বলেছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা। তার সুখের কথা। স্বপ্নের কথা। আনন্দের কথা। বুকের ভেতরে জ'মে থাকা জলের কথা। হুমায়ুন আজাদ কবিতার মতো ক'রে শিশুকিশোরদের বলেছেন মুক্তিযুদ্ধের এমন গল্প, যা বুকে জাগিয়ে দেয় হাহাকার।
হুমায়ুন আজাদ
হুমায়ুন আজাদ (২৮ এপ্রিল ১৯৪৭ - ১১ আগস্ট ২০০৪; ১৪ বৈশাখ ১৩৫৪ - ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন একজন বাংলাদেশী কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, সমালোচক, গবেষক, ভাষাবিজ্ঞানী, কিশোর সাহিত্যিক এবং রাজনৈতিক ভাষ্যকার। তিনি বাংলাদেশের প্রধান প্রথাবিরোধী এবং বহুমাত্রিক লেখক যিনি ধর্ম, মৌলবাদ, প্রতিষ্ঠান- ও সংস্কারবিরোধিতা, নিরাবরণ যৌনতা, নারীবাদ ও রাজনীতি বিষয়ে নির্মম সমালোচনামূলক বক্তব্যের জন্য ১৯৮০-র দশক থেকে ব্যাপক পাঠকগোষ্ঠীর দৃষ্টি আর্কষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
২০০২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি জার্মান কবি হাইনরিখ হাইনের উপর কাজ করার জন্য জার্মান সরকারের নিকট একটি বৃত্তির আবেদন করেছিলেন। ২০০৪-এর ৭ আগস্ট জার্মান কবি হাইনরিখ হাইনের ওপর গবেষণা বৃত্তি নিয়ে জার্মানি যান।
২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ১১ আগস্ট রাতে একটি পার্টি থেকে প্রত্যাবর্তনের পর আবাসস্থলে আকস্মিকভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন হুমায়ুন আজাদ। ১২ আগস্ট ফ্ল্যাটের নিজ কক্ষে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।