ভূমিকা মীর বরকত এই সময়ে আবৃত্তি ভুবনের যুগপৎ প্রিয় এবং শ্রদ্ধাস্পদ একটি নাম। তাঁর সান্নিধ্য পাওয়া, তাঁর রচন-বচনের শ্রোতা হতে পারা আবৃত্তিপ্রেমী, আবৃত্তিকর্মীর জন্য অনেক আকাঙ্ক্ষিত বিষয়। কেবল আবৃত্তির বিষয় ধরে কথা বলতে চাইলেও মীর বরকতের কর্মপরিধি জানতে আরও এক পথ... মঞ্চনাটকেও প্রবেশ করতে হবে। ইতােমধ্যে তিনি তিনটি মঞ্চনাটকেরও নির্দেশনার কাজ শেষ করেছেন এবং যথেষ্ট সুনামের সঙ্গে তা মঞ্চে উপস্থাপন করেছেন। তদুপরি তিনি কেবল বড়দের কাজের মধ্যেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি, শিশুদের নিয়েও তার সাংস্কৃতিক পদযাত্রা অব্যাহত রেখেছেন। মীর বরকত ‘কণ্ঠশীলন' নামের বৃহদাকার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন ১৯৮৪ সাল থেকে। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে ‘কণ্ঠশীলন' বলতে মীর বরকতের নাম ভেসে ওঠে অনেকের আগে। তাঁর এই চলা বিরতিহীন, কমাবিহীন। চলতে চলতে কণ্ঠশীলন কর্মযজ্ঞে নৈকট্য লাভ করেছেন শিক্ষাগুরু ওয়াহিদুল হক, বাশিল্পাচার্য নরেন বিশ্বাস, পটুয়া কামরুল হাসান, কথাশিল্পী শওকত আলী, কবি শামসুর রাহমান, সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক ও শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী'র। এই সান্নিধ্য মীর বরকতের জন্য অশেষ প্রেরণা-উৎস নিঃসন্দেহে। ক্লান্তিহীন এই পথচলায় যােগ হয় ২০১০ সালে প্রকাশিত মীর বরকতের ‘আবৃত্তির ক্লাস' নামের গ্রন্থটি। আবৃত্তি শিক্ষার্থীর জন্য অত্যন্ত প্রয়ােজনীয় ও সময়ােপযােগী একটি বই। আজ বয়সের নিকেশে প্রায় ষাটের কাছাকাছি এসেও কথােপকথনে, দেহশৈলী ভঙ্গিমায় তরুণ, প্রাণবন্ত মীর বরকতের এবারের প্রকাশিত পুস্তকে থাকছে ভিন্ন ভিন্ন কার্যকারণে, বিভিন্ন সময়ে লেখা কিছু প্রবন্ধ এবং আবৃত্তি উপযােগী কিছু কবিতার সন্নিবেশ। প্রত্যাশা করি, এই গ্রন্থটি পূর্বে প্রকাশিত ‘আবৃত্তির ক্লাস’-এর মতােই আবৃত্তিপ্রেমী সকলের জন্য প্রয়ােজনীয় গ্রন্থ হবে।