তিনি প্রশ্ন করেন, মানুষ চিড়িয়াখানায় ঢুকেই প্রথম কীসের খাঁচাটার সামনে যায়? উত্তর, 'বাঁদর।' তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বাংলা চলচ্চিত্রের সেই বাঁদরটা আমি। আমাকে অভিনয়ের সুযোগই দেয়া হয়নি। তিনি বাংলাদেশের সেই অভিনয়শিল্পী, যাঁর গোটা মহাভারত মুখস্থ। বিস্ময় প্রকাশ করলে বলেন, 'এটাই তো স্বাভাবিক। না পড়লে অভিনয় করব কী করে?' তিনি ষাটের দশকের সুপ্রতিষ্ঠিত কবি, গদ্যলেখক। আহমদ ছফা, সৈয়দ শামসুল হকের মতন সুসাহিত্যিকেরা তাঁর চায়ের আড্ডার নিত্যসঙ্গী। দেশের প্রথম শ্রেণির সকল জাতীয় দৈনিকে তিনি নিয়মিত লিখেছেন। কিন্তু অভিনয়ের খাতায় নাম লেখালেন কেন প্রশ্নে বলেন, 'দুটো ভাতের জন্যে।' অভিনয়ে নাম লেখানোর কারণে উকিল বাবা বের করে দেন বাড়ি থেকে। তাঁর সমস্ত জীবনের বিচিত্র পরিভ্রমণের আত্মকথনমূলক গ্রন্থ এই প্রথম বেরোল 'ছাপাখানার ভূত' থেকে। সঙ্গে থাকছে শিল্পীর লেখা প্রকাশিত-অপ্রকাশিত বেশকিছু কবিতা। দীর্ঘ ৩ বছরের কাজের পর তাঁর মৃত্যুর ১ মাস ১ সপ্তাহ পর বেরোচ্ছে এটিএম শামসুজ্জামানের প্রথম আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ 'আমি আমি'। দুর্ভাগ্যবশত তিনি দেখে যেতে পারেননি 'আমি আমি'। তবে এ এক মজাদার বিরল শিল্পীর জীবনগাঁথার দলিল হয়ে রইল।