ভূমিকা প্রোগ্রামিংয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হলে প্রোগ্রামিং সমস্যা সমাধান করা বা যাকে আমরা প্রবলেম সলভিং বলি, সেই জিনিসটি করার কোনো বিকল্প নেই। কেউ যখন নতুন প্রোগ্রামিং শিখবে, তখন প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণাগুলো আয়ত্ত্বে আনার পরপর কয়েকশ ঘণ্টা প্রোগ্রামিং চর্চা করা আবশ্যক। ইন্টারনেটে হাজার হাজার প্রোগ্রামিং সমস্যা রয়েছে, যেগুলো সমাধান করে অনলাইন জাজে পরীক্ষা করা যায়। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে ওই সমস্যাগুলো বাংলা ভাষায় লেখা নয়। তাই আমাদের অনেক শিক্ষার্থীরাই সেখানে আগ্রহ পায় না। এছাড়া প্রোগ্রামিংয়ে যারা একেবারে নতুন, তাদের জন্য আলাদাভাবে কোনো রিসোর্স আমার চোখে পড়েনি। তাই এই বইটি লেখার কথা আমার মাথায় আসে। বইটি ষষ্ঠ শ্রেণি ও তার ওপরের যেকোনো ক্লাসের শিক্ষার্থীর জন্য উপযোগী। তবে তার আগে জানা থাকতে হবে সি প্রোগ্রামিং ভাষা। আমার "কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ১ম খণ্ড" বইতে যতটুকু প্রোগ্রামিং দেখানো হয়েছে, এই বইয়ের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সেটুকু প্রোগ্রামিং জানাই যথেষ্ট। বইটি পড়ার সময় অবশ্যই প্রতিটি সমস্যা আগে নিজে চেষ্টা করতে হবে। কয়েক ঘণ্টা একনাগাড়ে চেষ্টা করেও কেউ যদি না পারে, তবে সমাধান দেখে শিখে নিতে হবে। আর ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজের সমাধান জমা দিয়ে যাচাই করার কাজটিও করা যাবে। বইটি লিখতে আমার সহলেখক রিনি এবং রাফি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। এছাড়া আমার ছাত্র তুষারও অনেক পরিশ্রম করে বইটি রিভিউ করেছে। আবার বইয়ের সমস্যাগুলোর কয়েকটি সিপিবুক ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া যেগুলো তৈরি করেছেন ইকরাম মাহমুদ ফাহিম, তানভীরুল ইসলাম, শুভানন রাযিক প্রমুখ। তাদের পরিশ্রম সফল হবে যখন আমাদের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় দাপিয়ে বেড়াবে। সেই দিনের অপেক্ষায় রইলাম। তামিম শাহ্রিয়ার সুবিন, গ্র্যাব আরএন্ডডি সেন্টার, সিঙ্গাপুর। ফেব্রুয়ারি ২০১৬। বইটি কাদের জন্য দক্ষ প্রোগ্রামার হওয়ার সহজ উপায় হচ্ছে প্রোগ্রামিং সমস্যা সমাধানের চর্চা করা। তাই যারা নতুন প্রোগ্রামিং শিখছে, তাদের জন্য উপযোগি করে ৫২টি প্রোগ্রামিং সমস্যা দেওয়া হয়েছে এবং সেগুলোর সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সমাধান দেখানোর সময় সি প্রোগ্রামিং ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। যারা ভবিষ্যতে বিভিন্ন প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চায় - যেমন জাতীয় হাই স্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা, ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড, এসিএম আইসিপিসি, তারা প্রোগ্রামিং সমস্যা সমাধানের চর্চা এই বই দিয়েই শুরু করতে পারে। এছাড়া বইটি প্রোগ্রামিংয়ের জগতে নতুন যে কারো জন্য উপযোগী হবে।
তামান্না নিশাত রিনি
তামান্না নিশাত রিনি একজন প্রকৌশলী, যিনি কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বর্তমানে তিনি একটি বৃহৎ দেশীয় প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন এবং নিয়মিতভাবে তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক ব্লগ লিখে থাকেন। তাঁর বাবা মোঃ মোজাম্মেল হক অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা এবং মা মাকসুদা হক গৃহিণী। বাবার চাকরির কারণে তাঁর শৈশব ও কৈশোর সুনামগঞ্জ জেলার ছাতকে কেটেছে। বই পড়া, গান শোনা এবং রাস্তায় হাঁটা তাঁর প্রিয় শখ। তাঁর প্রথম প্রকাশিত বইয়ের নাম "৫২ প্রোগ্রামিং সমস্যা ও অন্যান্য"।
তামিম শাহরিয়ার সুবিন
তামিম শাহরিয়ার (ডাকনাম: সুবিন)-এর জন্ম ১৯৮২ সালের ৭ নভেম্বর ময়মনসিংহে। গ্রামের বাড়ি কুমিলা জেলার চান্দিনা উপজেলার হারং গ্রামে। তাঁর বাবা মাে: মােজাম্মেল হক ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা এবং মা ফেরদৌসি বেগম গৃহিণী। স্ত্রী সিরাজুম মুনিরা ও পুত্র আরাভ শাহরিয়ারকে নিয়ে বর্তমানে সিঙ্গাপুরে বসবাস করছেন।
লেখাপড়া করেছেন হােমনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এ কে উচ্চ বিদ্যালয়, নটর ডেম কলেজ এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যায়ে। ২০০৬ সালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে পাস করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন বিভিন্ন প্রােগ্রামিং প্রতিযােগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন। পরবর্তী সময়ে (২০০৭ ও ২০০৮ সালে) তিনি এসিএম আইসিপিসি ঢাকা রিজিওনাল-এর বিচারক ছিলেন। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করলেও পরে সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে কাজ শুরু করেন। বাংলাদেশে থাকাকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন মুক্ত সফটওয়্যার লিমিটেড ও দ্বিমিক কম্পিউটিং। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডে একজন একাডেমিক কাউন্সিলর। বর্তমানে সিঙ্গাপুরে গ্র্যাব নামক একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন।
তাহমিদ রাফি
তাহমিদ রাফি– এর জন্ম ১৯৮৮ সালের ১৮ অক্টোবর ঢাকা জেলায়। তিনি সেন্ট যোসেফ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০৪ সালে মাধ্যমিক ও নটরডেম কলেজ থেকে ২০০৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। ২০০৩, ২০০৪ ও ২০০৫ সালে অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক গণিত অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। ২০০৫ সালে মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত ৪৬-তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে অংশনগ্রহণকারী প্রথম বাংলাদেশ দলের সদস্য ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন ২০১২ সালে। স্নাতক সম্পন্ন করে তিনি কিছুদিন সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তি সময়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষা প্রসারের জন্য তামিম শাহ্রিয়ার সুবিনের সঙ্গে তিনি সহ-প্রতিষ্ঠা করেন দ্বিমিক কম্পিউটিং। এর কিছুদিন পরে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন দ্বিমিক প্রকাশনী। প্রকাশনীর মাধ্যমে তিনি কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট সংক্রান্ত বিভিন্ন বই তৈরী করেছেন। সমসাময়িক সময়ে তিনি বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, বেসিস বিআইটিএম, বিডিওএসএন, কোড ইট গার্ল সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আয়োজিত প্রোগ্রামিং ট্রেনিং প্রোগ্রামে ইন্সট্রাকটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।